‘আস্ সা’আহ্’ (সময়-ক্ষণ) বা ‘আল কিয়ামাহ্’ তিন প্রকার অর্থে ব্যবহৃত হয়ঃ (ক) গুরুত্বপূর্ণ এবং খ্যাতনামা ব্যক্তির মৃত্যু, (আস্ সা’আতুস্ সুগরা—ছোট কিয়ামত) (খ) জাতীয় বিপর্যয় (আস্ সা’আতুল ওস্তা — মধ্যম কিয়ামত) (গ) বিচার দিবস (আস্ সা’আতুল কুবরা— সর্ববৃহৎ কিয়ামত)। কুরআন শরীফে এই শব্দের ব্যবহার শেষ দুই অর্থে হইয়াছে। প্রাসঙ্গিক বর্ণনা প্রতীয়মান করে যে, এখানে এই শব্দের ব্যবহার জাতির আসল ভিত্তি টলাইয়া দেয়! আরবজাতির আসন্ন সর্বনাশের প্রতিও ইহার বিশেষ ইশারা হইতে পারে, যখন তাহাদের রাজনৈতিক শক্তির নিরাপদ দূর্গ মক্কা নগরের পতন নির্ধারিত ছিল এবং তাহাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও সামাজিক রীতি-নীতি ভাঙ্গিয়া চুরমার হইয়া যাওয়া নির্ধারিত ছিল। ইহার দ্বারা সেই মুহূর্তও বুঝাইতে পারে যখন শোচনীয় দুঃখ-দুর্দশা মানব জাতিকে বিশ্ব-যুদ্ধের আকারে অতর্কিতে পাকড়াও করিবে এবং উহার পিছনে চরম-দুর্দশাপূর্ণ পরিবর্তন আনয়ন করিবে। তফসীরাধীন আয়াত ২ঃ২১৩ আয়াতের সহিত মিলাইয়া পড়িলে এই ধারণার প্রতি সমর্থন পাওয়া যায় যে,’আস্ সা’আহ্’বা’আল কিয়ামাহ্’ কুরআনে ব্যবহৃত শব্দদ্বয় সাধারণতঃ চরম জাতীয় বিপর্যয় বা দুর্দশা বুঝায়, যাহা সমগ্র জাতিকে অতর্কিতে পাকড়াও করার ভাব প্রকাশ করে।