৯৮৬

“আল্-আরশ” অর্থ—সিংহাসন। ইহা দ্বারা আল্লাহ্‌তা’লার সর্বোৎকৃষ্ট অলৌকিক ও অসাদৃশাত্মক (সিফ্‌তে তানযিহিয়াহ্‌)-এর প্রতি নির্দেশ করে, অর্থাৎ এহেন গুণ বা সিফ্‌ত অন্য দ্বিতীয় কোন সত্তার মধ্যে পাওয়া যায় না। সূরা ইখলাসের মধ্যে উল্লেখিত আল্লাহ্‌তা’লার গুণ চতুষ্টয় সর্বোত্তম অলৌকিক গুণাবলী। এই সিফ্‌তসমূহ চিরস্থায়ী এবং অপরিবর্তনশীল। আল্লাহ্‌তা’লার অন্য গুণগুলি লৌকিক ও সাদৃশাত্মক (সীফ্‌তে তাশ্‌বিহিয়াহ্) অর্থাৎ এইরূপ গুণসমূহের কম-বেশী বা অংশ বিশেষ অন্য সত্তার মধ্যেও দৃষ্ট হয়। পরে উল্লেখিত সীফ্‌তসমূহ ‘আরশ’-এর বহনকারী বলিয়া অভিহিত হয়। এইগুলি হইতেছে ‘রাব্বুল আলামীন’, ‘আর্‌-রহমান’, ‘আর-রাহীম’ এবং ‘মালেকে-ইয়াওমেদ্‌দীন’। ‘আরশ’ যে আল্লাহ্‌তা’লার সর্বোৎকৃষ্ট অলৌকিক গুণ বাচক ইহা ২৩ঃ১১৭ আয়াত হইতেও সুস্পষ্ট, যাহার মধ্যে ইহা প্রতিপন্ন হইয়াছে যে, “আল্লাহ্‌তা’লার একত্ব” এবং তাঁহার আরশ ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। কারণ ইহা সর্বোচ্চ ও অত্যুৎকৃষ্ট আলৌকিক সিফ্‌ত, যাহা ঐশী একত্বের সক্রিয় প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করে। আল্লাহ্‌তা’লার অন্যান্য সীফ্‌তসমূহের বিভিন্ন পরিমাণে মানুষের মধ্যেও প্রকাশ বা প্রতিফলন ঘটিয়া থাকে। আরশে “সুপ্রতিষ্ঠিত হইলেন” শব্দগুলির মর্মার্থ হইতেছে যে, জড়জগত সৃষ্টির পর আল্লাহ্‌তা’লা সর্বোত্তম অলৌকিক সীফ্‌তসমূহ এবং তাঁহার সাদৃশ্যপূর্ণ গুণসমূহ কার্যকর হইল, এবং বিশ্বের সকল বিষয়াবলী নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক নিয়মাধীন নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হইতে আরম্ভ করিল এবং সম্পূর্ণরূপে নিপূণ ও নির্ভুলভাবে ক্রিয়াশীল হইয়া গেল। আরও দেখুন, ‘The Larger Edition of the commentary, pp.973-976.