ইহা অতীব তাৎপর্যপূর্ণ যে, এই আয়াতটিতে নবী করীম (সাঃ)-এর শত্রুদেরকে অত্যন্ত জোরালোভাবে পুত্রহীন (আব্তার) বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে, যদিও ইতিহাস ইহাই সাক্ষ্য দেয় যে, এই সূরা অবতরণের পূর্বে ও পরে মহানবী (সাঃ)-এর যত পুত্র সন্তান জন্মিয়াছিলেন, তাহাদের সকলেই অল্পবয়সে মারা যান এবং তাঁহার তিরোধানের সময় কোন পুত্র সন্তান রাখিয়া যান নাই। ইহাতে স্পস্টতঃ বুঝা যায় যে, এখানে ‘আব্তার’ শব্দটির অর্থ ‘যে ব্যক্তির কোন আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী নাই।’ আবতার অর্থ এই নয় যে, তাহার কোন ঔরসজাত পুত্র নাই। ‘আবতার’ (পুত্রহীন) কথাটি এখানে আধ্যাত্মিক অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। বস্তুতঃ ঐশী পরিকল্পনা ইহাই ছিল যে, মহানবী (সাঃ)-এর কোন দৈহিক পুত্রই থাকিবে না, কিন্তু তাঁহার (সাঃ) জন্য ইহাই নির্ধারিত ছিল যে, তিনি যুগে যুগে অসংখ্য আধ্যাত্মিক পুত্রের পিতা হইয়া চিরঞ্জীব থাকিবেন এবং এইসব আধ্যাত্মিক পুত্র হইবেন শারীরিক পুত্র অপেক্ষা শতগুণে অধিক বিশ্বাসী, অধিক অনুগত ও ভক্ত এবং অধিক প্রেমিক। অতএব, রসূলে পাক (সাঃ) পুত্রহীন ছিলেন না, বরং তাঁহার শত্রুরাই পুত্রহীন হইয়া পড়িল, কেননা তাহাদের সন্তানগণ ইসলামে দীক্ষিত হইয়া মহানবী (সাঃ)-এর আধ্যাত্মিক পুত্র পরিগণিত হইলেন এবং তাহারা তাঁহাদের (দৈহিক) পিতাদের অত্যাচার-অনাচার ও ইসলাম-বিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাহাদের নাম উচ্চারণ করিতেও লজ্জা ও অপমান বোধ করিতেন।