Category: Uncategorized

  • ৩৪৫৮

    ‘আবু লাহাব’ (অগ্নিশিখার পিতা) ছিল নবী করীম (সাঃ)-এর চাচা এবং চরম অত্যাচারী শত্রু। তাহার আসল নাম ছিল আব্দুল উয্‌যা। তাহার আকৃতি-প্রকৃতি, মুখাবয়ব ও চুল ছিল রুক্ষ এবং মেযাজ ছিল অতিশয় কর্কশ। সেই কারণে তাহাকে ডাকা হইত ‘আবু লাহাব’ নামে। মহানবী (সাঃ)-এর প্রচারকার্যের শুরুতেই একটি ঘটনা ঘটিয়াছিল। এই সূরা তাহা স্মরণ করাইয়া দেয়। আল্লাহ্‌র নির্দেশে নবী করীম (সাঃ) ঐশী-বাণীকে আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে প্রচারের জন্য, ‘সাফা’ পাহাড়ে দাঁড়াইয়া মক্কার গোত্রগুলিকে ডাকিলেন, যাহাদের মধ্যে ছিল লুবাই, মুররা, কিলাব, কুসাঈ ও অন্যান্য নিকট-আত্মীয়বর্গ। তিনি তাহদিগকে বলিলেন, আল্লাহ্ তাঁহাকে রসূল (প্রেরিত পুরুষ) হিসাবে পাঠাইয়াছেন। এমতাবস্থায় তাহারা যেন তাঁহার কাছে অবতীর্ণ ঐশী-বাণীকে গ্রহণ করে এবং তাহাদের ভ্রান্ত পথ ও কুকর্মসমূহ ছাড়িয়া দেয়। তিনি অত্যন্ত আন্তরিকতা ও সহৃদয়তার সহিত তাঁহার কথাগুলি পেশ করিয়াছিলেন এবং বলিয়াছিলেন যে, এই ঐশী-বাণীকে না মানিলে আল্লাহ্‌র শাস্তি তাহাদের উপরে নিপতিত হইবে। নবী করীম (সাঃ)-এর বক্তব্য শেষ হইতে না হইতেই আবু লাহাব দাঁড়াইয়া বলিলঃ “তুমি ধ্বংস-প্রাপ্ত হও; এই কথা বলার জন্যই কি তুমি আমাদিগকে ডাকিয়াছ?” (বুখারী)। ‘অগ্নি-শিখার পিতা’ এই ডাক-নামটি আবু লাহাব নামীয় ব্যক্তিটিকেও বুঝাইতে পারে, অথবা ইসলামের অগ্নিশর্মা শত্রুদিগকেও বুঝাইতে পারে, অথবা ইহা হইতেও অধিকতর যুক্তিযুক্তভাবে শেষ-যুগের পশ্চিমা জাতিগুলিকেও বুঝাইতে পারে—যাহার একাংশ আল্লাহ্‌তা’লার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে, আর অপরাংশ আল্লাহ্‌তা’লার একত্বকে অস্বীকার করে। এই উভয়াংশই সমভাবে ইসলাম-বিরোধী। এই হিসাবে, ‘দুইটি হাত’ বলিতে, এই দুইটি শক্তিশালী দলকে বুঝাইয়াছে। এই অর্থে আয়াতটির তাৎপর্য হইতেছেঃ ইসলামের শত্রুগণের (বিশেষ করিয়া এই দুইটি পশ্চিমা শক্তি ও তাহাদের মিত্রবর্গের) ইসলাম-বিরোধী প্রচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র সম্পূর্ণ বিফল হইবে এবং তাহাদের ইসলাম-বিধ্বংসী চেষ্টা-তদ্বীরসমূহ তাহাদের জন্যই সর্বনাশ ডাকিয়া আনিবে। ইসলামের ক্রমোন্নতি দেখিয়া তাহারা অন্তর্জালায় ভুগিবে। আর তাহাদের রাশি-রাশি ধন-দৌলত, জ্ঞান-গরিমা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি তাহাদেরই চোখের সম্মুখে বিলীন হইবে।