Category: Uncategorized

  • ৩৪৫৭

    রসূলে পাক (সাঃ)-কে আল্লাহ্‌তা’লা এখানে উপদেশ দিতেছেন, যেহেতু তাঁহার হাতে বিজয়ের পতাকা আসিয়া গিয়াছে এবং ইসলাম আরবের ভূমিতে এমন প্রাধান্য লাভ করিয়াছে যে, তাহার প্রাক্তন শত্রুগণ তাহার ভক্ত অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হইয়া গিয়াছে, সেইহেতু তাঁহার উচিত এইসব নবাগত অনুসারীদের জন্য আল্লাহ্‌র সমীপে দোয়া করা, যাহাতে তাহাদের পূর্বকৃত শত্রুতামূলক অত্যাচার-অপকর্ম ও পাপরাশি ক্ষমা করিয়া দেওয়া হয়। ‘তাঁহার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর’—মহানবী (সাঃ)-এর প্রতি আল্লাহ্‌তা’লার এই নির্দেশটির তাৎপর্য নিহিত রহিয়াছে নবদীক্ষিতগণের জন্য ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে—ইহাই প্রতীয়মান হয়। ইহার অন্য তাৎপর্য এই কথার মধ্যে রহিয়াছে যে, নবাগত ও নবদীক্ষিত মুসলমানদের বিপুল সংখ্যায় একসাথে আগমনের ফলে, তাহাদের পূর্বেকার ধ্যান-ধারণা, আচরণ-অভ্যাস ও শিক্ষা-দীক্ষাকে পরিবর্তন পূর্বক, ইসলামের রঙে তাহাদিগকে রঙীন করিয়া তোলার দুরূহ কাজ সম্পাদনে বহু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকিয়া যাইবে এবং সেই কারণে মুসলিম সমাজে তাহাদের ধ্যান-ধারণা ও আচার-আচরণ অনুপ্রবেশ করার সম্ভাবনা রহিয়াছে। এই ত্রুটি-বিচ্যুতি হইতে মুসলিম সমাজ ও ইসলামকে নিরাপদ, রাখার জন্য এই ‘ইস্তেগফার’-এর প্রার্থনা শিখানো হইয়াছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে লক্ষ্য করা যাইতে পারে যে, কুরআনের যে স্থলেই মহানবী (সাঃ)-এর বিজয়ের কিংবা বড় রকমের কৃতকার্যতার উল্লেখ করা হইয়াছে, সেখানেই তাঁহাকে ক্ষমা-প্রার্থনা ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া করার নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। ইহাতে পরিষ্কার বুঝা যায়, এই দোয়া নবী করীম (সাঃ)-এর নিজের জন্য নহে, বরং অন্যদের জন্য, অর্থাৎ যখনই তাঁহার উম্মতের মধ্যে ইসলামের নীতিমালা ও নির্দেশাবলী হইতে বিচ্যুতি ঘটিবার কারণ উপস্থিত হইবে, তখনই যেন আল্লাহ্‌তা’লা তাহাদিগকে ঐ বিপদাবলী হইতে রক্ষা করার ব্যবস্থা করেন—এই জন্য মহানবী(সাঃ)-কে এই দোয়াটি করিবার নির্দেশ দিয়াছেন। অতএব এই ক্ষমা-প্রার্থনার মধ্যে, মহানবী (সাঃ)-এর নিজের কোন কাজের সম্পর্ক নাই। কেননা পবিত্র কুরআন অনুযায়ী নবী করীম (সাঃ)সত্য, ন্যায়-নীতি ও নৈতিকতার বিচ্যুতি হইতে মুক্ত ছিলেন। (দেখুন টীকা ২৬১২ এবং ২৭৬৫)।