‘মুদাব্বেরাত’ অর্থ ঐ সকল সত্তা বা মানুষের দল যাহারা অতিশয় দক্ষতার সহিত তাহাদের উপর ন্যস্ত কর্তব্য সম্পাদনের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এবং তাহা বাস্তবায়নের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা করিয়া থাকে। ২ হইতে ৬ পর্যন্ত আয়াতগুলিকে কিছু সংখ্যক জ্ঞানীগুণী তফসীরকারক ফিরিশ্তাদের প্রতি আরোপ করিয়াছেন এবং মনে করিয়াছেন, ৭-৮ আয়াতে যে মহাঘটনা ঘটিবার কথা রহিয়াছে, ফিরিশ্তাগণকে সেই ঘটনার সাক্ষীরূপে পেশ করা হইয়াছে। কিন্তু ফিরিশ্তাগণের সাক্ষ্য প্রদান মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধির আওতায় আসে না। অতএব, প্রসঙ্গ দৃষ্টে মনে হয়, এই আয়াতগুলি (২ হইতে ৬) নবী করীম (সাঃ)-এর সাহাবীগণের (রাঃ) দলকেই বুঝাইয়াছে, যাহারা অদূর ভবিষ্যতে আত্মোৎসর্গ ও আপ্রাণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামকে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত ছড়াইয়া দিয়াছিলেন। এই আয়াতগুলিতে সাহাবীগণের অতুলনীয় কর্তব্য-নিষ্ঠার একটি চিত্র ভবিষ্যদ্বাণীরূপে চিত্রিত আছে। শুধু তাহাই নয়, এই কর্তব্য-নিষ্ঠার ফলে, তাহাদের উপর মানব-গোষ্ঠীর এক বিরাট অংশের প্রশাসনিক দায়িত্ব আসিয়া বর্তাইবে এবং সেই দায়িত্বও তাহারা অত্যন্ত দক্ষতা ও ন্যায়-পরায়ণতার সহিত সম্পাদন করিবেন— এই কথাও ভবিষ্যদ্বাণীর আকারে এই আয়াতগুলিতে ইঙ্গিত দেওয়া হইয়াছে। সংক্ষেপে বলিতে গেলে, এই আয়াতগুলিতে, মহানবী (সাঃ)-এর সাহাবীগণের চারিত্রিক গুণাবলীর বৈশিষ্ট্যগুলি তুলিয়া ধরা হইয়াছে (দি লারজার এডিশন অব দি কমেন্টারী দেখুন)।