৩০৪৬

হযরত রসূলে পাক (সাঃ)-এর আনীত ধর্ম কেবল আরবদের জন্যই নহে বরং আরব-অনারব নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানবের জন্য ইহাই আল্লাহ্‌র একমাত্র মনোনীত ধর্ম। এই ধর্ম যে কেবল মহানবী (সাঃ)-এর সম-সাময়িক বিশ্ববাসীর জন্য তাহা নহে বরং সর্বকালের সর্বমানবের জন্য প্রলয়কাল পর্যন্ত ইহাই চূড়ান্ত ধর্ম হিসাবে বিরাজিত থাকিবে। অথবা, এই আয়াতটির তাৎপর্য ইহাও হইতে পারে যে, মহানবী (সাঃ) অন্য আর এক দল লোকের মধ্যে উত্থিত হইবেন, যাহারা তাঁহার সম-সাময়িক অনুসারীদের সাথে মিলিত হয় নাই। এই আয়াতে, শেষ যুগে প্রতিশ্রুত মসীহ্ রূপে মহানবী (সাঃ)-এর দ্বিতীয় আধ্যাত্মিক অভূদয় ঘটিবে বলিয়া ভবিষ্যদ্বাণী রহিয়াছে। মহানবী (সাঃ) স্বয়ং এইরূপ ঘটার প্রতিশ্রুতি দিয়া গিয়াছেন। বিষয়টির উপর একটি প্রসিদ্ধ হাদীস রহিয়াছে। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, ‘একদা যখন আমরা নবী করীম (সাঃ)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম, ঠিক সেই সময়ে সূরা জুমু’আ অবতীর্ণ হইল। আমি রসূলে আকরাম (সাঃ)-এর কাছে জানিতে চাহিলাম যে, এই সূরাতে উল্লেখিত তাহাদের অন্য দল যাহারা এখনও আসিয়া তাহাদের সহিত মিলিত হয় নাই সেই অন্য দল কাহারা? সালমান ফারসীও আমাদের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন। আমি বার বার এই একই প্রশ্ন উত্থাপন করায়, হুযুর আকরাম (সাঃ) সালমান ফারসীর উপর হাত রাখিয়া বলিলেন, ‘ঈমান যদি সপ্তর্ষি মণ্ডলেও উঠিয়া চলিয়া যায় তথাপি, ইহাদের (পারস্য বংশীয়দের) এক ব্যক্তি নিশ্চয়ই তাহা ফিরাইয়া আনিবে’ (বুখারীঃ কিতাবুত তফসীর)। মহানবীর এই বর্ণনা হইতে বুঝা যায়, আয়াতটিতে যে ব্যক্তির আগমনের কথা বলা হইয়াছে, তিনি পারস্য বংশীয় হইবেন। আহমদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিশ্রুত মসীহ্ পারস্য বংশীয় ছিলেন। হযরত নবী করীম (সাঃ)-এর অন্যান্য হাদীস হইতে দেখা যায় যে, প্রতিশ্রুত মসীহ্ তখনই আগমন করিবেন যখন কুরআনের অক্ষর ব্যতীত কিছুই বাকী থাকিবে না এবং ইসলাম কেবল নামে মাত্র বাকী থাকিবে অর্থাৎ ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ব্যবহারিক জীবন হইতে উঠিয়া যাইবে (বায়হাকী)। অতএব, দেখা যায় যে, কুরআন এবং হাদীস উভয়েই এই একই কথা ব্যক্ত করিতেছে যে, প্রতিশ্রুত মসীহের সত্তার মধ্যেই মহানবী (সাঃ)-এর দ্বিতীয় আগমন সম্পন্ন হইবে।