২৫৭২

জ্ঞান ও প্রকাশের দিক হইতে দেখিলে, আল্লাহ্‌র বাণী সর্বাপেক্ষা পূর্ণতা লাভ করিয়াছে কুরআনে। এই আয়াতে কুরআনকে ‘কিতাবাম্ মুতাশাবিহান’ বলা হইয়াছে। ইহার অর্থ এই যে, এই গ্রন্থের বাণীগুলিকে পরস্পর সামঞ্জস্যশীল ও পরস্পর নির্ভরশীল বহু অর্থে গ্রহণ করা যায়। কুরআনের কোথায়ও স্ব-বিরোধ নাই, বৈপরিত্য নাই। ইহা কুরআনের অনন্য শ্রেষ্ঠত্ব। কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব হইল এই যে, আলঙ্কারিক রূপকভাষা, হিতোপদেশপূর্ণ ঘটনাবলী ও ছোট ছোট কাহিনী ইত্যাদি অত্যন্ত উপযুক্ত স্থলে ব্যবহৃত হইয়াছে। ইহাতে ভাষার সৌন্দর্য, বর্ণনার মাধুর্য বর্ধিত হওয়ার সাথে সাথে, অল্প কথায় বহু ব্যাপক অর্থ প্রকাশ করিয়াছে। এখানে কুরআনকে আবার ‘মাসানী’ বলা হইয়াছে। অর্থাৎ মৌলিক বিশ্বাসসমূহ ও অতি প্রয়োজনীয় আকিদাগুলিকে কুরআন বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন পন্থায় ও বিভিন্ন রূপ দিয়া বার বার বর্ণনা করিয়াছে, যাহাতে এইগুলির অপরিহার্যতা, প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য মানুষের মনে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করিয়া দেওয়া যায়। এই ‘মাসানী’ শব্দ দ্বারা ইহাও ব্যক্ত করা হইয়াছে যে, কুরআনের কতকগুলি শিক্ষা অন্যান্য ঐশী কিতাবের শিক্ষার মতই। তবে, কুরআনে অনেক নতুন শিক্ষামালা আছে যাহা অতীত কিতাবে নাই। শেষোক্ত শিক্ষাগুলি সৌন্দর্যে ও শ্রেষ্ঠত্বে এতই বৈশিষ্ট্য-মণ্ডিত যে, অন্যান্য কিতাবের শিক্ষা এইগুলির ধারে কাছেও যাইতে পারে না, তুলনায় আসা তো দূরের কথা।