২৪৬৫

‘ওয়া’ অর্থঃ- ও, অতঃপর, যখন, একই সময়ে, সাথে, একত্রে, কিন্তু, অথচ। ইহা ‘রুব্বা’র সমার্থবোধক যেমন প্রায়ই, সময় সময়, হয়ত অর্থেও ব্যবহৃত হয়।এই শব্দটি কসম বা শপথ গ্রহণার্থেও ব্যবহাত হইয়া থাকে তখন অর্থ দাঁড়ায়—আমি অমুকের বা অমুক জিনিষের নাম লইয়া শপথ করিতেছি বা আমি শপথপূর্বক সাক্ষ্য দিতেছি বা সাক্ষীরূপে পেশ করিতেছি (আকরাব,লেইন) কুরআন করীমে আল্লাহ্‌ কোন জীবের নামে শপথ করিয়াছেন বা কোন জিনিষের নামে শপথ করিয়াছেন অর্থাৎ ঐ জীব বা ঐ জিনিষটাকে সাক্ষ্যস্বরূপ পেশ করিয়াছেন। সাধারণতঃ আল্লাহ্‌র নামে কোন ব্যক্তি যখন শপথ লইয়া কথা বলে, তখন তাহার উদ্দেশ্য থাকেঃ (১) প্রয়োজনীয় সাক্ষীর অভাব পূরণ করা, (২)তাহার কথার ওজন বৃদ্ধি করা, (৩)তাহার বক্তব্যের প্রতি দৃঢ়প্রত্যয় সৃষ্টি করা অন্য কোন ব্যক্তির সাক্ষ্য না থাকায় এইভাবে আল্লাহ্‌কে সাক্ষ্য রূপে পেশ করিয়া সে বলিতে চায় যে, সে সত্য কথা বলিতেছে। কিন্তু কুরআনে ব্যবহৃত শপথের উদ্দেশ্য ইহা হয় না যে, ঐ শপথের জোরেই বক্তব্য বিষয়ের সত্যতা প্রতিপন্ন হইবে; বরং শপথের মাঝেই যুক্তিও লুক্কায়িত থাকে। কুরআনী শপথের মধ্যে প্রায়শঃ স্বতঃসিদ্ধ প্রাকৃতিক নিয়ম-নীতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় এবং উহার মাধ্যমে মনে করাইয়া দেওয়া হয় যে,আধ্যাত্মিক নিয়ম-নীতিও অনুরূপ স্বতঃসিদ্ধ স্বাভাবিকভাবেই কার্যে পরিণত হয়।কুরআনী শপথের উদ্দেশ্যটি হইল,ভবিষ্যদ্বাণী প্রকাশ করা, যাহার পরিপূর্ণতার মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠিত ও সাব্যস্ত হইয়া যায়। শেষোক্ত উদ্দেশ্যটিই এই শপথের মধ্যে বিদ্যমান রহিয়াছে।