মহাশূন্যে বিরাজমান গ্রহ-নক্ষত্র-তারকাপুঞ্জ ও অন্যান্য বিশালাকার জ্যোতিষ্কসমূহ সুশৃঙ্খলভাবে ভাসিয়া বেড়াইতেছে। কুরআন নাযেল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মানুষ এই অভিমত পোষণ করিত যে, আকাশমালা ঘন দেহধারী জড়পিণ্ড বিশেষ। ইহা কুরআনের এক মহাবৈশিষ্ট্য যে, ইহা এমন এক সুন্দর ভাষা ও শব্দব্যবহার করে যাহা পূর্বেকার ভুল-ভ্রান্তিগুলিকে সাবলীলভাবে খণ্ডন করিয়া দেয় এবং সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান ও দর্শনের রাজ্যে নূতন নূতন আবিষ্কারের পথ খুলিয়া দেয়। এই আয়াত বিশ্ব-জগতের সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার প্রতি ইঙ্গিত করে আকাশের তারকামণ্ডলীই বলুন আর পৃথিবীর উপগ্রহই বলুন সকলেই তাহাদের প্রতি আরোপিত কাজ নিয়মিতভাবে সুশৃঙ্খলার সহিত সময়মত ও অভ্রান্তভাবে একে অন্যের ব্যাঘাত না ঘটাইয়া সম্পাদন করিয়া যাইতেছে। এই সৌরমণ্ডল এমনিভাবে লাখ লাখ মণ্ডলের একটি মাত্র, এই লাখ লাখ মণ্ডলে এমন সব মণ্ডলও রহিয়াছে, যাহারা সৌরমণ্ডল হইতে লক্ষলক্ষ গুণ বড়। এই লক্ষ লক্ষ সূর্যও লক্ষ লক্ষ তারকা মহাশূন্যে এমনিভাবে পরস্পরের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব রক্ষা করিয়া ভাসিয়া বেড়াইতে ছে যে, ইহাদের সামঞ্জস্য ও সৌন্দর্য কখনও ব্যাহত হয়না। একে অপরের সঙ্গে উহারা ঐক্য-সূত্রে গাঁথা থাকিয়া নিজ নিজ কক্ষপথে নিজের গন্তব্যের দিকে চলে। কাঠোমো ও গতিময়তায় তারা সব এক ও অভিন্ন, কী চমৎকার!