এই আয়াতে বলা হইয়াছে যে, তিনি তোমাদিগকে ধূলি (তুরাব) হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন। অন্যত্র বলা হইয়াছে যে, মানুষকে ‘ত্বীন’ বা কাদামাটি হইতে সৃষ্টি করা হইয়াছে (৬ঃ৩, ১৭ঃ৬২,২৩ঃ১৩, ৩২ঃ৮, ৩৭ঃ১২, ৩৮ঃ৭২)। ধূলা হইতে মানুষের সৃষ্টি বলিতে তাহার সৃষ্টির বিভিন্ন স্তর বা অবস্থার ঐ স্তরকে বুঝায় যখন সে কদমাবস্থা প্রাপ্ত হয় নাই। ইহা কদ্দমাবস্থা প্রাপ্তির পূর্বস্তর। ইহা দ্বারা একথাও বুঝায় যে, মানুষ মাটি হইতে তাহার খাদ্য সংগ্রহ করিতে থাকে যাহা দ্বারা সে প্রথম হইতে শেষাবধি বাঁচিয়া থাকে। এই আয়াতে, আল্লাহ্তা’লা স্বীয় অস্তিত্বের তিনটি যুক্তি পেশ করিতেছেন।(ক) আল্লাহ্তা’লা মানুষকে ধূলি হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন অথচ এই ধূলির সাথে জীবনের বাহাতঃ কোনও সম্পর্ক নাই, ইহাতে জীবন-সৃষ্টির কোন বাহ্যিক উপকরণও দৃষ্ট হয় না। (খ) তিনি মানুষকে সূক্ষ্ম অনুভূতিসমূহ দ্বারা ভূষিত করিয়াছেন এবং মানুষের প্রকৃতির মধ্যে উন্নতির ও প্রগতি সাধনের বিরাট বাসনা ও প্রেরণা প্রোথিত করিয়া দিয়াছেন। মানুষের মনস্কামনা সিদ্ধির জন্য যে সব শক্তি ও গুণাবলীর ব্যবহার প্রয়োজন হয় সেই সব শক্তি ও গুণাবলী তাহার মধ্যে মওজুদ রাখিয়াছেন। (গ) তিনি মানুষের মনের গহিনে বিস্তৃতি লাভ, খ্যাতি লাভ ও বিশ্বব্যাপী প্রভুত্ব লাভের পিপাসা রাখিয়া দিয়াছেন এবং এইসব লাভের উপযোগী প্রয়োজনীয় শক্তিসমূহও তাহাকে দান করিয়াছেন।