এই আয়াত সামাজিক আচার-আচরণের কিছু রীতি-নীতি পর্যালোচনা করিয়াছে যাহার প্রাদুর্ভাব মানব সমাজের বিশেষ শ্রেণীর মধ্যে ঘটে এবং যাহা ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে স্বাধীনভাবে সামাজিক মেলামেশাতে বাধা সৃষ্টি করে। সেই সকল অন্ধ কুসংস্কারকে নাকচ করিয়া দিয়া ইসলাম পূর্ণ সামাজিক সমতার নির্দেশ দান করে এবং মানুষে মানুষে পরস্পর সংযোগবিহীন শ্রেণী-বিভক্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিরেধিতা ঘোষণা করে। এখানে সমাজের সকল স্তরের লোকের মুক্ত মেলামেশা ও আদান-প্রদান এবং সমবেতভাবে খাওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর ইসলাম গুরুত্ব আরোপ করিয়াছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকের মধ্যে অন্তরঙ্গতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ও মানুষে মানুষে ব্যবধান সৃষ্টির বাধাসমূহ দূরীকরণার্থে যৌথভাবে আহার করা ইসলাম পসন্দ করে এবং উৎসাহ যোগায়, যদিও পৃথক ভাবে খাওয়া-দাওয়া করা ইসলাম নিষেধ করে না। ভারতের হিন্দুরা যেমন ইদানিংকালেও অস্পৃশ্য লোকদিগের সংঙ্গে বসে না বা খায় না, সেইরূপ আরববাসী ও ইহুদীগণেরও অন্ধ অথবা সামাজিকভাবে কিছু অক্ষম লোকদিগের সহিত আহার করিতে দ্বিধা ও সন্দেহ ছিল। এইরূপ প্রথাকে ইসলাম সন্দিগ্ধদৃষ্টিতে দেখে এবং সকল স্তরের সকল শ্রেণীর লোকের সমবেত হইয়া একত্রে আহার গ্রহণ করা এবং নিঃসংকোচে মেলামেশা করাকে উৎসাহ প্রদান করে। ‘হারাজ’ অর্থ পাপ, আপত্তি, দোষ অথবা অনুরোধ।