১৭৬৩

কুরআন করীমে মরিয়মকে হযরত হারূন (আঃ)-এর ভগ্নীরূপে আখ্যায়িত করায় রসূল করীম (সাঃ)-এর নিকট প্রশ্ন করা হইয়াছিল এবং হুযুর পাক (সাঃ) প্রশ্নকারীকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন যে, ইসরাঈলীগণ তাহাদের সন্তানদের নাম নবী এবং সাধু বুযুর্গগণের নামের অনুকরণে রাখিত, ইহা তিনি জানেন কিনা (বায়ান, ৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃঃ১৬,ও জারীর,১৬শ খণ্ড, পৃঃ ৫২)। এখানে মরিয়মকে হারূন (আঃ)-এর ভগ্নী বলা হইয়াছে, মূসা (আঃ)-এর ভগ্নী বলা হয় নাই, যদিও উভয়েই ভাই ছিলেন। কার্যতঃ হযরত মূসা (আঃ) ছিলেন ইহুদী ধর্মের প্রবর্তক এবং হারূন (আঃ) ছিলেন ইহুদী যাজক শ্রেণীর প্রধান (এনসাইক বিব এণ্ড এনসাইক ব্রিট, ‘আরোন’ অধ্যায়) এবং হযরত মরিয়মও পুরোহিত সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন। মহানবী (সাঃ)-এর পবিত্র জীবনের এক ঘটনা তাবারী বর্ণনা করিয়াছেন যাহা পাঠকবৃন্দকে আব, ‘আম’, উখ্‌ত এইরূপ আরবী শব্দের মর্ম উপলব্ধি করার অন্তদৃষ্টি দান করিয়াছে। নবী করীম (সাঃ)-এর স্ত্রী ইহুদী-বংশজাত হযরত সাফিয়া (রাঃ) একদিন আঁ-হযরত (সাঃ)-এর নিকট অভিযোগ করিলেন যে, তাঁহার অন্যান্য স্ত্রীগণের কেহ কেহ তাঁহাকে ইহুদী নারী বলিয়া কটাক্ষ করে। ইহাতে নবী করীম (সাঃ) তাঁহাকে বিদ্রুপের প্রতিউত্তর দিতে বলিয়াছিলেন এই কথা দ্বারা যে, হারূন (আঃ) তাঁহার পিতা, মূসা (আঃ) তাঁহার চাচা এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁহার স্বামী। এখন ঘটনা তো এই যে, নবী করীম (সাঃ) নিশ্চয়ই জানতেন যে, হারূন (আঃ) হযরত সাফিয়া (রাঃ)-এর পিতা ছিলেন না, না হযরত মূসা (আঃ) তাঁহার চাচা ছিলেন। কুরআন শরীফে ৩৩ঃ৭০ আয়াতে এইরূপ অভিযোগের উল্লেখ রহিয়াছে। ইহুদীগণের বয়োজ্যেষ্ঠ লোকেরা ঈসা (আঃ)-এর মাতাকে ‘হারূন (আঃ)-এর ভগ্নী’ বলিয়া হয়ত ইহাই বুঝাইতে চাহিয়াছিল যে, হারূনের ভগ্নী মেরী যেমন হযরত মূসা (আঃ)-এর বিরুদ্ধে এক নারীকে অবৈধভাবে বিবাহ করার অভিযোগ আনিয়া জঘন্য অপরাধ করিয়াছিল (এই অভিযোগ সম্পর্কে ৩৩ঃ৭০ আয়াতে উল্লেখিত), সেইরূপে তিনিও তাঁহার একই নামধারীর মত, অবৈধ সন্তান জন্ম দিয়া জঘন্য পাপ করিয়াছেন। আরো বিস্তারিত জানার জন্য ৪০১ টীকা দ্রষ্টব্য।