১৬১৬

পূর্ববর্তী দুইটি আয়াতে দুইটি পরোক্ষ হত্যার ইঙ্গিত করা হইয়াছিল। বর্তমান আয়াত প্রত্যক্ষ হত্যা সম্বন্ধে বর্ণনা করিতেছে। যথাযথভাবে গঠিত বিচারালয়ে অভিযুক্ত হত্যাকারী অপরাধী বলিয়া প্রমাণিত হইলে নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণের এই অধিকার রহিয়াছে যে, আইন বলে হত্যাকারীর প্রাণ বধ কার্যকর করা অথবা নিহত ব্যক্তির মৃত্যুর বিনিময়ে তাহারা রক্তপণ গ্রহণ করিতে পারে। যাহা হউক ওয়ারিসকে রক্তের বদলে অর্থের খেসারত প্রদান যদি জনসাধারণের শান্তি অথবা নৈতিকতার পরিপন্থী হয় অথবা ওয়ারিসগণের রক্ত-পণ সম্বন্ধে দাবী যদি প্রকৃত প্রমাণিত না হয়, তাহা হইলে আদালত তাহাদের ঐচ্ছিক অধিকার নাকচ করিয়া দিয়া হত্যাকারীর প্রাণ দণ্ডাদেশ কার্যকর করার রায় দিতে পারেন। বাস্তবিক পক্ষে রাষ্ট্র এবং নিহতের ওয়ারিসান উভয়ই দোষীকে ক্ষমা করিয়া দেওয়া অথবা দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে সমান অধিকার রাখে। অপরাধী ব্যক্তির শাস্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রের এখতিয়ার প্রতিকার সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ের উপর প্রযোজ্য। কিন্তু আয়াতের প্রথমাংশে দোষী ব্যক্তির অধিকারও সংরক্ষণ করা হইয়াছে, যেমনঃ ‘হত্যার ব্যাপারে সে যেন সীমালংঘন না করে’ বাক্যাংশের মধ্যে হত্যাকারীর পক্ষে সুপারিশের কথা নিহিত রহিয়াছে। এই কথার মধ্যে ইশারা করা হইয়াছে যে, যদিও সাধারণ নিয়ম খুনের বদলা খুন তবুও নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ কর্তৃক এই আদেশ শাব্দিক অর্থে প্রয়োগ করার জন্য সর্বাবস্থায় জিদ ধরা উচিৎ নহে। আইনের চরম শাস্তি হত্যাকারী তখনই পাইবে, যখন সমতা, সাধারণ শাস্তি ও নৈতিকতার নিয়ম অনুরূপ অবস্থার দাবী করে। রক্তের বদলে অর্থ গ্রহণ করিয়া তাহার জীবন রক্ষা করা যাইতে পারে যদি এই ক্ষমার ফলে মনে করা যায় যে, অপরাধী নৈতিক সংশোধনের পথ গ্রহণ করিবে।