হযরত দাউদ (আঃ)-এর পরে ইস্রাঈল জাতিকে প্রথমে দৈব দুর্বিপাক গ্রাস করিয়াছিল এবং দ্বিতীয়বার তাহাদের উপর শাস্তি আসিয়াছিল হযরত ঈসা (আঃ)-এর পরে। বাইবেল হইতে ইহা প্রতীয়মান হয় যে, ইহুদীরা হযরত মূসা (আঃ)-এর পরে খুবই শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হইয়াছিল। দাউদ (আঃ)-এর সময়ে তাহারা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে এবং তাঁহার মৃত্যুর কিছু কাল পরেও ইহারা ক্ষমতা ও গৌরবে উন্নতি করিতে থাকে। পরবর্তী কালে এই রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে অবনতির শিকারে পরিণত হয় এবং খৃষ্টপূর্ব প্রায় ৭৩৩ অব্দে সামারিয়া বিজিত হয় অ্যাসিরিয়ান দ্বারা, যাহারা জেযরিলের উত্তর অংশের ইহুদী রাজ্যের সম্পূর্ণ অংশ দখল করিয়া নেয়। খৃষ্টপূর্ব ৬০৮ সনে ফেরাউন নিকো-এর মিশরীয় সৈন্যবাহিনী কর্তৃক প্যালেষ্টাইন লুণ্ঠিত ও বিধ্বস্ত হয় এবং ইসরাঈলীগণ মিশরীয় শাসনাধীনে চলিয়া যায় (যিউ এনসাইক, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃঃ ৬৬৫)। তাহাদের পার্থিব শক্তি ক্ষয়, তাহাদের ধ্বংসযজ্ঞ এবং তাহাদের উৎসাদন কোন কিছুই তাহাদেরকে তাহাদের সংশোধনের জন্য প্রবৃত্ত করিতে পারে নাই। তাহাদের অতীতের শয়তানী ক্রিয়াকলাপে তাহারা লাগিয়াই ছিল। আল্লাহ্তা’লার ক্রোধাগ্নি প্রায় আসন্ন হওয়ায় বনী ইস্রাঈলদিগকে তাহাদের পাপাচার ত্যাগ করিবার জন্য যিরমিয় নবী সতর্ক করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহারা এই নবীর সতর্কবাণীর প্রতি কর্ণপাত করে নাই। জেহোয়াকিম-এর শাসনকালে ব্যাবিলনের নেবুখদনিৎসর প্রথম আক্রমণে মিশরীয়গণকে পরাজিত করিয়া প্যালেষ্টাইন দখল করে এবং অনেক ধর্মপ্রাণ গুণীব্যক্তিকে ও ধন-সম্পদ সঙ্গে করিয়া নিয়া যায়, কিন্তু শহরটিকে বিজয়াক্রমণের ধ্বংসলীলা হইতে অব্যাহতি দেয়। খৃষ্টপূর্ব ৫৯৭ সালেও প্যালেষ্টাইন অবরুদ্ধ হয় এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পতিত হয়। সিদৃকিয়ার (Zedekiah) বিদ্রোহীগণ নেবুখদনিৎসরের সাহায্যে প্যালেষ্টাইন, দ্বিতীয়বার আক্রমণ করে এবং অবরোধের দেড় বৎসর পরে আকস্মিক প্রচণ্ড আক্রমণে শহরটি দখল করিয়া লয়। রাজা সিদ্কিয়া শহর ছাড়িয়া পলায়ন করে কিন্তু তাহাকে বন্দী করা হয়। তাহার পুত্রদিগকে হত্যা করা হয় এবং তাহার চোখ উৎপাটিত করা হয় এবং পরে বেড়ী লাগাইয়া তাহাকে ব্যাবিলনে নিয়া যাওয়া হয়। ধর্মশালা, রাজপ্রাসাদ এবং শহরের রহৎ অট্টালিকাগুলিকে ভস্মীভূত করা হয়, প্রধান পুরোহিত ও অন্যান্য নেতৃস্থানীয় লোকদিগকে হত্যা করা হয় এবং বহু সংখ্যক লোককে বন্দী করিয়া নিয়া যাওয়া হয় (‘জেরুযালেম’ অধ্যায়ের অধীন যিউ এনসাইক, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৬৬৫ পৃঃ এবং ৭ম খণ্ড ১২২ পৃঃ)।