১৪৬৫

এই আয়াতে আল্লাহ্‌তা’লার পবিত্র কালাম ‘কুরআন’-এর সাদৃশ্য এমন বৃক্ষের সহিত বর্ণনা করা হইয়াছে যাহার মধ্যে চারিটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অত্যাবশ্যকীয় গুণাবলী রহিয়াছেঃ (ক) ইহা উত্তম অর্থাৎ ইহা এমন সব শিক্ষা হইতে দোষমুক্ত যাহা মানবীয় বিবেক-বুদ্ধির বিরুদ্ধে পীড়াদায়ক, বা অনুভূতি ও সংবেদনশীলতার বিপরীত নহে; (খ) যাহা উৎকৃষ্ট,দৃঢ় ও শক্ত ফলবতী বৃক্ষের ন্যায়। ইহা মজবুত ও স্থায়ী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং ইহার উৎস হইতে উপজীবিকা বা শক্তি রক্ষার উপায় আহরণ করিয়া নূতন ও সবল জীবন ধারণ করে এবং মজবুত বৃক্ষের ন্যায় বিরুদ্ধবাদীদের বিরূপ সমালোচনার সশব্দ বিস্ফোরণের ঝাপটায় মাথা নত করে না এবং সকল বিরোধিতার ঝড়ের মুখে মাথা উঁচু করিয়া দণ্ডায়মান থাকে। ইহার জীবন ও জীবিকা একই উৎস হইতে প্রবাহিত বলিয়া ইহার মূলনীতি এবং শিক্ষার মধ্যে কোন বিরোধ বা গরমিল নাই, (গ) ইহার শাখা প্রশাখাসমূহ বেহেশ্‌ত পর্যন্ত পৌঁছায়। ইহার আজ্ঞানুবর্তীতায় অর্থাৎ আমল করিয়া মানুষ আধ্যাত্মিক মর্যাদার উচ্চতম সোপানে আরোহণ করিতে পারে; (ঘ) ইহা স্বীয় প্রভুর অনুমতিক্রমে সকল ঋতুতে সদা ফল দিতেছে অর্থাৎ কুরআন প্রচুর পরিমাণে সুফল প্রদান করে, ইহার আশিসসমূহের নিদর্শন সকল সময়েই পরিলক্ষিত হইয়া থাকে, সর্বযুগের মানুষ ইহার শিক্ষার উপর আমল করিয়া আল্লাহ্‌তা’লার সহিত মিলনের সৌভাগ্য লাভ করিতেছে এবং তাহাদের চারিত্রিক সৌন্দর্য ও সততা সমসাময়িক লোকদের উপরে উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হইয়াছে। কুরআন মজীদ উপরোল্লিখিত সকল গুণাবলী পরিপূর্ণভাবে বহন করে।