ইহা সুবিদিত যে, উচ্চ আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণের আত্মিক উন্নতির প্রকৃতি বা স্তর (মোকাম) অনুযায়ী তাহাদের দেহ হইতে বিভিন্ন বর্ণের নয়নাভিরাম রশ্মিরেখা বিকীর্ণ হইয়া থাকে। আল্লাহ্তা’লার নবীগণের শরীর হইতে বিচ্ছুরিত আলোক-রেখা বা জ্যোতিঃ উজ্জল সাদা বর্ণের। একই ভাবে হযরত মূসা (আঃ)-এর হাত যে রশি বা জ্যোতিঃ বিকীর্ণ করিয়াছিল উহা অবশ্যই সেই বর্ণের (অর্থাৎ উজ্জ্বল সাদা) হইয়া থাকিবে এবং যখন দৃশ্যমান করা হইল তখন স্বভাবতঃই অবলোকনকারীদের চোখে তাঁহার হস্তদ্বয় সম্পূর্ণ সাদাবর্ণের দেখাইয়াছিল। অন্যান্য নবীগণের সময়েও এইরূপ আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতাপূর্ণ বুযুর্গ ছিলেন বলিয়া জানা যায়। আল্লাহ্তা’লা হযরত মূসা (আঃ) কে বলিয়াছিলেনঃ তোমার হস্ত তোমার নিজ বগলে প্রবেশ করাও। উহা শুভ্র নির্দোষ হইয়া বাহির হইবে (২৮ঃ৩৩)। সাংকেতিক ভাষায় মূসা (আঃ)-এর প্রতি ইহা এক স্পষ্ট ইংগিত বহন করিয়াছিল যে, যদি তিনি তাঁহার অনুগামীদিগকে তাঁহার নিকটে সম্পৃক্ত করিয়া রাখেন এবং তাঁহার তত্বাবধানে নিয়ন্ত্রিত রাখেন, তবে তাহারা নিজেরাই কেবল আলোকিত হইবে না, অধিকন্তু অন্যের জন্যও তাহারা আলো বিকীরণ করিবে। নচেৎ তাহারা শুধু অন্ধকারাচ্ছন্নই হইবে না,বরং নৈতিক ভাবে ব্যাধিগ্রস্তও হইবে। অতএব, ঐ বিস্ময়কর ঘটনাটি যাদুকরের যাদুমন্ত্র ছিল না, পরন্তু গভীর আধ্যাত্মিক গুরুত্বপূর্ণ এক নিদর্শন ছিল।