৪৭৭

‘আয্‌ আফান্‌ মুযা আফাতান’ (বহু বৃদ্ধি-সম্বলিত) কথাগুলি সুদের গুণবাচক বিশেষণ রূপে এখানে ব্যবহৃত হয় নাই এবং ‘রিবা’ শব্দের অর্থের সঙ্কোচন ঘটাইবার জন্যও ব্যবহৃত হয় নাই। এই শব্দগুলি বিশেষ ধরণের ‘রিবা’ অর্থে নহে, বরং সাধারণতঃ “রিবার”  (সুদের) যে প্রকৃতি রহিয়াছে, উহারই বর্ণনা স্বরূপ ব্যবহৃত হইয়াছে। সুদের প্রকৃতিই এই যে, ইহা ক্রমাগত বাড়িয়া চলে। খৃষ্টান জাতি যদিও সুদকে বৈধ করিয়া লইয়াছে, তথাপি জানিয়া রাখা দরকার যে, মূসা (আঃ) সুদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিলেন (যাত্রাপুস্তক-২২ঃ২৫, লেবীয় – ২৫ঃ৩৬-৩৭; দিতিও – ২৩ঃ১৯-২০)। এই আয়াতের অর্থ ইহা নহে যে অল্প সুদ বৈধ, কেবল চড়া সুদ বা চক্রবৃদ্ধি সুদ অবৈধ। সর্বপ্রকার সুদই অবৈধ, তা অল্পই হউক আর অধিকই হউক। ‘আয্‌’আফান্‌ মুযা’আফাতান’ (বহু বৃদ্ধি-সম্বলিত) সুদই মহানবী (সাঃ)-এর সময় প্রচলিত ছিল, আর সুদের এই হীন-প্রকৃতিকে লক্ষ্য করিয়াই এই শব্দ দুইটি ব্যবহার করা হইয়াছে, অন্যথায় সুদ মাত্রই হারাম (২ঃ২৭৬-২৮১)। যুদ্ধের বিষয় আলোচনা করিতে গিয়া, সুদ-নিষিদ্ধ-করণের আদেশ জারি করা বড়ই তাৎপর্যপূর্ণ। ২ঃ২৮০ আয়াতেও যুদ্ধের বিষয় বর্ণনা কালে সুদের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ আসিয়াছে। ইহাতে বুঝা যায় সুদ ও যুদ্ধের মধ্যে একটি গভীর যোগ-সূত্র রহিয়াছে। বর্তমান কালের যুদ্ধ সমূহের দ্বারা এই যোগ-সূত্র ভালভাবেই প্রমাণিত হইয়াছে। সত্য বলিতে কি, যুদ্ধ বাঁধাইতে এবং ইহাকে দীর্ঘায়িত করিতে সুদ বিশেষভাবে ইন্ধন যোগায়।