খৃষ্টান মতবাদ ও বিশ্বাস সম্বন্ধে আলোচনা এই আয়াতে আসিয়া সমাপ্ত হইয়াছে। নাজ্রানের ষাটজন খৃষ্টানের একটি দল আব্দুল মসীহ্ (আল্-আকীব নামে পরিচিত)-এর নেতৃত্বে মদীনায় আসিয়া মহানবী (সাঃ)-এর সাথে মসজিদে সাক্ষাৎ করে। ঈসা (আঃ)-এর তথাকথিত ঈশ্বরত্ব নিয়া সুদীর্ঘ আলোচনা চলে। আলোচনা পরিপূর্ণ হওয়ার পরও যখন খৃষ্টানগণ যুক্তির বিরুদ্ধে অনমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করিয়া তাহাদের মিথ্যা-বিশ্বাসের অটলতা প্রকাশ করিলেন, তখন আল্লাহ্র আদেশানু্যায়ী রসূলে পাক (সাঃ) শেষ চিকিৎসা হিসাবে তাহাদিগকে প্রার্থনা প্রতিযোগিতার আহবান জানাইলেন, যাহাকে ধর্মীয় পরিভাষায় ‘মুবাহালা’ বলে। অর্থাৎ মিথ্যা বিশ্বাস অবলম্বনকারীর উপর আল্লাহ্র অভিশাপ চাহিয়া পক্ষ-প্রতিপক্ষ উভয়েই প্রার্থনা করিয়া উহার ফলাফল দ্বারা সত্য নির্ণয় করা হইবে। কিন্তু যেহেতু খৃষ্টানেরা তাহাদের বিশ্বাসের সত্যতা সম্বন্ধে একেবারে সুনিশ্চিত ছিল না, সেই কারণে এই মুবাহালাতে তাহারা সম্মত হইল না এবং প্রকারান্তরে তাহাদের বিশ্বাসের অন্তঃসার শূন্যতাই প্রকাশ পাইল। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যাইতে পারে যে, আলোচনা চলাকালে, মহানবী (সাঃ) স্বীয় মসজিদে ঐ খৃষ্টানগণকে তাহাদের আপন পদ্ধতিতে প্রার্থনা করার অনুমতি দিয়াছিলেন। তাহারা পূর্বমুখী হইয়া প্রার্থনা করিয়াছিল। ধর্মের ইতিহাসে, এইরূপ পরধর্ম-সহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত আর কোথায়ও দৃষ্টিগোচর হয় না (যুরকানী)।