২৬৭

যুদ্ধের বিষয়টির সাথে পৌত্তলিকদেরকে বিবাহ করার ব্যাপারটা ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্ক রাখে। কারণ, যুদ্ধে লিপ্ত থাকার দরুন, যোদ্ধারা অনেক দিন ধরিয়া নিজেদের বাড়ীঘর হইতে বিচ্ছিন্ন থাকেন এবং মুশরিক স্ত্রীলোকদিগকে বিবাহ করিতে প্রলুব্ধ হন। কুরআন এইরূপ বিবাহ করাকে শক্তভাবে নিষেধ করিতেছে। একইভাবে, মুশরেক পুরুষের কাছে মুমেন কন্যা দান নিষিদ্ধ। ধর্মীয়, সামাজিক ও নৈতিক কারণে এই নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে। একজন মুশরেক স্বামী তার স্ত্রীর উপরতো বটেই, ঐ স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তানদের উপরেও অত্যন্ত জঘন্য কুপ্রভাব বিস্তার করিবে। একইভাবে একজন মুশরেক স্ত্রী নিজ সন্তানদিগকে নিশ্চয় পৌত্তলিকতার বিষময় শিক্ষার মধ্যে লালন-পালন করিয়া বংশটাকেই সকল পারলৌকিক মঙ্গল হইতে বঞ্চিত করিবে। এতদ্ব্যতীত,মো’মেনের স্ত্রী যদি মুশরেক হয় অথবা মুসলমান স্ত্রীর স্বামী যদি মুশরেক হয়, তাহা হইলে তাহাদের ধ্যান-ধারণা, বিশ্বাস-সংস্কার এবং জীবন-বোধ ইত্যাদি পরস্পর বিপরীত মুখী হইবে, ঐক্য, সমঝোতা ও মনের মিল ব্যাহত হইতে হইতে বিলীন হইয়া, পারিবারিক শান্তিকে বিনষ্ট করিয়া দিবে। ইসলাম কৃতদাসকে নিকৃষ্ট জাত বলিয়া চিহ্নিত করে না। একটি মুসলমান স্ত্রীলোক কৃতদাসী হইলেও একজন স্বাধীন মুসলমানের স্ত্রী হইবার জন্য এক স্বাধীনা মুশরেক নারী হইতে অধিকতর উপযোগী। তেমনি, একজন মুসলমান কৃতদাসও স্বাধীন মুসলমান স্ত্রীলোকের স্বামী হইবার জন্য একজন স্বাধীন মুশরেক পুরুষ হইতে অধিকতর উপযোগী ও শ্রেষ্ঠতর। মুসলমান সমাজে কৃতদাসগণ, তাহাদের ঈমান ও ধর্মপরায়ণতার সুবাদে, উচ্চ সম্মানের অধিকারী ছিলেন। হযরত বেলাল, সাল্‌মান ও সালেম প্রমুখাৎ কৃতদাস ছিলেন, ইসলাম গ্রহণপূর্বক কৃতদাস হইতে মুক্তমানবে পরিণত হইয়া, ধর্মীয় চেতনা ও ধর্মীয় পরিশীলন দ্বারা সারা মুসলমান সমাজে উচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের পাত্ররূপে গণ্য হইয়াছিলেন।