২১৮

“ইহা উত্তম নেকী নহে যে তোমরা গৃহে উহার পশ্চাৎ দিক দিয়া প্রবেশ কর” এই বাক্যটি একটি নীতি নির্দ্ধারণী বাক্য। উপাসনার বিভিন্ন রূপ ও পদ্ধতির উদ্দেশ্য ঐ উপাসনার উপকারিতার মধ্যেই অন্তর্নিহিত রহিয়াছে। প্রত্যেক বেলা পরিবর্তনের সাথে সাথে একটা একটা করিয়া উপাসনা সংশ্লিষ্ট রাখার মধ্যে কোন সার্থকতা নাই। বিশ্বাসীগণের অতি-উদগ্রীবতা হইতে উদগত প্রশ্ন – উপবাস ব্রতের মত অন্যান্য মাসেও অন্যান্য ধরণের উপাসনা থাকা দরকার—এইরূপ কথাকে, গৃহের সদর দরজা দিয়া প্রবেশ না করিয়া “পিছন দিক দিয়া প্রবেশ করার” সাথে তুলনা করা যাইতে পারে। আসল বিষয়টি হইল ইবাদত, সময় হইল গৌণ। কিন্তু প্রশ্নটিতে সময়কে মুখ্য ও ইবাদতকে গৌণ দেখাইতেছে। ইহা যেন, ঘোড়ার সামনে গাড়ী বাঁধার মত। কথাটিতে পৌত্তলিক আরবদের একটি কুপ্রথার প্রতি ইঙ্গিত আছে বলিয়া মনে হয়। তাহারা মক্কায় হজ্জ করিতে যাইয়া যদি কোনও কারণে হজ্জ না করিয়া গৃহে ফিরিত, তাহা হইলে তাহারা সম্মুখ দ্বার দিয়া গৃহে প্রবেশ না করিয়া, পিছন দিকের দেওয়াল টপকাইয়া গৃহে আসিত। আয়াতটি এই বদভ্যাসকে নিন্দা করিতেছে, কেননা এরূপ করাতে কোনই পুণ্য নাই। পুণ্য তো একটা আধ্যাত্মিক বিষয়, যাহা আধ্যাত্মিক কর্মের ফলে প্রাপ্ত হওয়া যায়। আয়াতটিতে এই উপদেশ নিহিত রহিয়াছে যে, উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উপযুক্ত পন্থা অবলম্বন অপরিহার্য (বুখারীঃ কিতাবুত তফসীর)।