কুরআন সমগ্র বিশ্বজগতকে অখণ্ড অবস্থায় একত্রে লইয়া চিন্তা-ভাবনা করার তাকিদ দেয়, যাহাতে আল্লাহ্র অস্তিত্ব ও একত্বের প্রমাণ সহজ উপায়ে লাভ করা সম্ভব হয়। প্রকৃতির বস্তুনিচয়কে আলাদা-আলাদা করিয়া দেখিলে, আল্লাহ্র অস্তিত্বের ব্যাপারে পুরাপুরি মীমাংসায় আসা তত সহজ হইবে না, যত সহজ হইবে সমগ্র বিশ্বজগতকে এককভাবে একত্রে লইয়া চিন্তা-ভাবনা করিলে। শুধু পৃথিবীকে লইয়া চিন্তা করিলে, হয়ত মনে হইবে, দৈবক্রমে অনু-পরমাণুর আকস্মিক সমাবেশে ইহা অস্তিত্বে আসিয়াছে। এইরূপ একই পন্থায় চন্দ্র, সূর্য, তারকা ইত্যাদিও অস্তিত্ব লাভ করিয়াছে। কিন্তু যখন সারাটা বিশ্ব-জগতকে আমরা সামগ্রিক ভাবে একটি অখণ্ড সত্তা হিসাবে ভাবি এবং উহার সবকিছুর মাঝে একটা নিয়ম-কানুন, শৃংখলা ও সমন্বয়-সমঝোতার নিগূঢ় সম্পর্ক লক্ষ্য করি, তখন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ছাড়া আর কোন উপায়ই থাকে না যে, এই অনুপম বিন্যাস আর এই মহা সমাবেশ অতি সুনিপুণ পরিকল্পনা দ্বারা সৃষ্ট হইয়াছে এবং সর্বজ্ঞানী সর্বশক্তিমান বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এক মহা সত্তা দ্বারা পরিচালিত হইতেছে। এই আয়াতে পরোক্ষভাবে অবিশ্বাসীদের দৃষ্টি এই কথার দিকে আকর্ষণ করা হইতেছে যে, প্রকৃতির দৃশ্যাবলী নিয়া চিন্তা-ভাবনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা তাহারা বুঝিয়া উঠিতে সমর্থ হইবে যে, মহানবী (সাঃ)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মোকাবিলা করিয়া তাহারা তাহাদের উদ্দেশ্য হাসিল করিতে পারিবে না। সব কিছুই কেবল আল্লাহ্র নিয়ন্ত্রণে রহিয়াছে এবং মহানবী (সাঃ)-এর স্বপক্ষে তাঁহার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কাজ করিতেছে।