‘রা-য়েনা’ শব্দটি ‘মুফাআলা’ ওজনের, যাহাতে পারস্পরিকতাবোধ বিদ্যমান আছে এবং উভয় দিকই সমমর্যাদায় অবস্থিত বুঝায়, সেই ক্ষেত্রে অর্থ দাঁড়াইবে, ‘আমাদিগকে মর্যাদা দাও যাহাতে আমরাও তোমাকে মর্যাদা দিতে পারি’। আর যদি ধরিয়া লওয়া হয় যে, শব্দটি ‘রা-ইন’ ধাতু হইতে উৎপন্ন (উচ্চারণে সামান্য বিভিন্নতা আছে, তাহা হইলে অর্থ হইবে, ‘হে বোকা’ বা ‘হে অহঙ্কারী ব্যক্তি’। যেহেতু এইরূপ দ্ব্যর্থবোধক শব্দের ব্যবহারের মাঝে রসূলে পাক (সাঃ)-এর প্রতি অবমাননা প্রকাশের এবং ভুল বুঝার অবকাশ রহিয়াছে, সেই জন্য আল্লাহ্তা’লা মুসলমানকে এরূপ শব্দ ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং এইরূপ ক্ষেত্রে সম্মান সূচক দ্ব্যর্থহীন শব্দ ব্যবহার করিতে উপদেশ দিয়াছেন, যেমন ‘উনযুরনা’ যাহার অর্থ ‘আমাদের জন্য অপেক্ষা করুন’। বাহিরের জাতির সাথে আরবীয় ইহুদীদের ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের উল্লেখ করিয়া, কুরআন এই আয়াতের মাধ্যমে উদাহরণ দিয়া বুঝাইতেছে, রসূলে করীম (সাঃ)-কে ছোট ও খাটো বানাইবার কী অপচেষ্টাই না ইহুদীরা করিতেছে,এমনকি মুসলমানদের মধ্যে বিবাদ-বিসংবাদ ও ঝগড়া-ঝাটি সৃষ্টি করিতেও তাহারা তৎপরতা চালাইতেছে। এখানে একটি মামুলি উদাহরণকে (দ্ব্যর্থবোধক শব্দে সৃষ্ট ভুল-ভ্রান্তি ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি) নির্বাচন করা হইয়াছে এই উদ্দেশ্যে যে, মানুষের ভাবাবেগ এতই শক্তিশালী যে, সামান্য তুচ্ছ ব্যাপারও অনেক সময় মহা বিপদ ডাকিয়া আনে এবং কর্তৃপক্ষের সম্মানসহ সমাজের শৃংখলাবোধকে ব্যাহত করিয়া থাকে।