১০৭

‘বানর’ শব্দটি এখানে আলঙ্কারিক ভাবে ব্যবহৃত হইয়াছে। ইহার মর্ম এই যে, ইসরাঈলীরা আধ্যাত্মিক চরিত্র ও নৈতিকতার দিক হইতে বানরের মত ঘৃণ্য ও নীচ হইয়া পড়িয়াছিল। শারীরিক গঠনের দিক দিয়া তাহারা বানর হইয়া যায় নাই। তাহারা সত্যি সত্যি বানরে পরিবর্তিত হইয়া যায় নাই, কেবল তাহাদের হৃদয় পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছিল (মুজাহিদ)। ‘আল্লাহ্ এখানে আলঙ্কারিক ভাষা ব্যবহার করিয়াছেন’ (কাসীর)। কুরআনে যদি শারীরিক পরিবর্তন অর্থেই বানর শব্দ ব্যবহৃত হইত, তাহা হইলে ইহার সাথে ‘খাসিয়াহ্’ বিশেষণ বসিত, কেননা ‘খাসিয়ীন’ শব্দটি কেবল যুল-উকূল অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন বিচারক্ষম প্রাণীর জন্য ব্যবহৃত হয়। এখানে এই শব্দটি ইচ্ছাপূর্বক ব্যবহৃত হইয়াছে, উদ্দেশ্য এই যে, বানর যেমন ঘৃণ্য ও অবহেলিত প্রাণী, তেমনি ইহুদীরা চিরকাল অবজ্ঞা ও ঘৃণিত অবস্থায় পৃথিবীতে বসবাস করবে। শিক্ষাদীক্ষা ও অর্থ সম্পদে তাহারা যতই ধনী হউক না কেন, তাহারা পৃথিবীর বুকে কোন স্থায়ী নিরাপত্তার স্থান রচনা করিতে পারিবে না। ‘খাসিয়ীন’ শব্দটির ধাতুগত অর্থ ঘৃণা, অপমান এবং এরূপ অবস্থায় ভূলুণ্ঠিত হওয়া।