‘জান্নাত’ শব্দটি এ স্থলে বেহেশ্তকে বুঝাইতেছে না, বরং ইহার শাব্দিক অর্থ বাগানকে বুঝাইতেছে। বেহেশ্ত-তুল্য যে উদ্যানে আদম (আঃ) কে প্রথম বসবাস করার জন্য দেওয়া হইয়াছিল, সেই উদ্যানের কথাই এখানে উল্লেখিত হইয়াছে। ইহা বেহেশ্ত বা স্বর্গ হইতে পারে না। ইহার প্রথম কারণ এই যে, আদমকে পৃথিবীতেই থাকার জন্য সৃষ্টি করা হইয়াছিল (২ঃ৩৭)। দ্বিতীয় কারণ এই যে, বেহেশ্ত এমনই এক স্থান, যাহাতে প্রবেশকারীকে কখনও বিতাড়িত করা হয় না (১৫ঃ৪৯)। অথচ পরবর্তী আয়াতেই আদমকে এই জান্নাত ছাড়িয়া চলিয়া যাইতে বলা হইয়াছে। ইহা দ্বারা বুঝা যায়, যে জান্নাতে (বাগানে) আদমকে প্রথমে থাকিতে দেওয়া হইয়াছিল, তাহা এই পৃথিবীর বুকেই ছিল। স্থানটি ফল-পুষ্পসমাকীর্ণ সবুজ বনানীর ছায়া-মণ্ডিত হওয়ায় ইহাকে জান্নাত নামে অভিহিত করা হইয়াছে। আধুনিক গবেষণা মূলে জানা গিয়াছে যে, ঐ স্থানটি ইরাক বা আসিরিয়ায় ব্যাবিলনের ‘ইডেন গার্ডেন’ বা স্বর্গোদ্যান ছিল (এনসাইক্লোপিডিয়া বৃটানিকায় ‘উর’ অধ্যায় দেখুন)।