বৃষ্টি যেমন ভিন্ন ভিন্ন ভূমির প্রকৃতি ও গুণানুযায়ী ভিন্ন ফল-ফলাদি উৎপাদন করিয়া থাকে, তদ্রপ ঐশী-বাণী বিভিন্ন মানুষকে ভিন্ন ভিন্নরূপে প্রভাবান্বিত করিয়া থাকে। বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (সাঃ) বলিয়াছেন যে, তিন প্রকার ভূমি আছেঃ (ক) ভাল, সমতল ভূমি যখন বৃষ্টির পানিতে সিঞ্চিত হয়, উহাকে শুষিয়া নেয় এবং উত্তম গাছপালা উৎপাদন করে ও প্রচুর ফল দিয়া থাকে, (খ) নিম্ন এবং অনমনীয় বা শীলাবৎ শক্ত ভূমি বৃষ্টির পানিকে সংগৃহীত করিয়া জমাইয়া রাখে,কিন্তু ইহাকে শোষণ করে না এবং এই কারণে গাছ-গাছড়া ইত্যাদি উৎপন্ন করে না, কিন্তু মানুষ এবং পশু পাখীর পানীয় জলের যোগান দিয়া থাকে; (গ) উচু শীলাভূমি, যাহা বৃষ্টির পানিকে না সংগ্রহ করে, না শোষণ করে, এবং উদ্ভিদাদি উৎপাদনের এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের উভয় উদ্দেশ্য সাধনে সম্পূর্ণ অক্ষম। একইভাবে মানুষও তিন শ্রেণীর হইয়া থাকে। যেমন— (১) সেই সকল লোক, যাহারা ঐশীবাণী দ্বারা শুধু নিজেরাই লাভবান হয় না, অধিকন্তু অন্যের জন্যও আধ্যাত্মিক পথনির্দেশের উৎসরূপে প্রমাণিত হইয়া থাকে, (২) যাহারা ঐশীবাণী হইতে নিজেরা কোন ফায়দা অর্জন করে না, কিন্তু ইহা লাভ করে এবং অন্যান্যদের উপকৃত হওয়ার জন্য উহার সঞ্চিত ভাণ্ডার রাখিয়া যায় এবং (৩) যাহারা ঐশীবাণী হইতে নিজেরাও কোনরূপে উপকৃত হয় না এবং অন্যদের ব্যবহারের জন্যও উহা সংরক্ষিত করিয়া রাখে না—তাহারাই সেই ভূমি সদৃশ যাহা না কোন কিছু উৎপন্ন করে, না পানি সঞ্চিত করে, যাহাতে মানুষ এবং পশু-পাখীরা পান করিতে পারে।