৮৫৪

বর্তমান এবং পরবর্তী আয়াত নীতি নির্ধারণ করিতেছে যে, কাফেরদিগের আহ্বান অনুযায়ী তাহাদের উপর শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নবী করীম (সাঃ)-এর হস্তে ছাড়িয়া দেওয়া হয় নাই। যদি তাহাই হইত তবে বহু পূর্বেই তাহারা তাহাদের প্রাপ্য শেষ পরিণতি ভোগ করিত এবং তখন সম্ভবতঃ হযরত ওমর ও খালেদ—যাহারা তখনো পর্যন্ত ইসলামের শত্রু ছিলেন এবং যাহারা পরবর্তীকালে ইসলামের শক্তিকে সংঘবদ্ধ ও সম্প্রসারিত করার জন্য নেতৃত্ব দেওয়ার পূর্বনির্ধারিত সৌভাগ্য লাভ করিয়াছিলেন—তাহারা ঈমান আনার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করিতেন। কিন্তু আল্লাহ্‌তা’লা সর্বশক্তিমান বলিয়া শাস্তি প্রদানে ধীর, এবং তিনি মানব-হৃদয়ের অন্তঃস্থলের ক্রিয়া সম্পর্কে সর্বজ্ঞাতা হওয়ায় তিনিই ভাল জানেন কাহাকে কখন শাস্তি দিবেন। কি পরিমাণ ক্লেশ অথবা স্বাচ্ছন্দ্য মানুষের কর্মকে প্রভাবিত করিয়া থাকে একমাত্র তিনিই জ্ঞাত, তাহা এবং মানবকৃত সৎকর্মসমূহ অন্যান্য কার্যের দ্বারা নিস্ফল বা রদ করিয়া দেওয়া হয় কিনা, ইহা কেবল আল্লাহ্‌তা’লাই পরিজ্ঞাত আছেন। মানুষের অন্তরে স্থাপিত সদগুণাবলীর বীজকণা সম্বন্ধে জ্ঞান একমাত্র তাঁহারই রহিয়াছে এবং এই বীজ অঙ্কুরিত হইয়া বৃদ্ধি পাইবে কিনা এবং শাখা-প্রশাখা বিস্তার করিয়া ফুল-ফল প্রদান করিবে কিনা, ইহা শুধু তাঁহারই জানা আছে। তিনিই কেবল বলিতে পারেন, সম্যক দৃষ্টিতে যে ব্যক্তি “শুষ্ক এবং আধ্যাত্মিক জীবনশূন্য,” ঐশী-বারিধারা বা রহমত বর্ষিত হইলে সে “সবুজ” তথা জীবন্ত হইয়া উঠিবে কিনা, অথবা যে “মৃত” সে পুনর্জীবন লাভে সফল হইবে কিনা। সংক্ষেপে, একমাত্র আল্লাহ্‌তা’লাই সকল বস্তু এবং সকল অবস্থা এবং সকল সম্ভাব্য ও অব্যক্তভাব বা বৃত্তি বা শক্তি সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। সুতরাং একমাত্র তিনিই বলিতে পারেন, কে শাস্তি পাওয়ার যোগ্য আর কে নহে।