যতদিন পর্যন্ত ঈসা (আঃ) জীবিত ছিলেন, তিনি তাঁহার অনুসারীদের প্রতি প্রখর দৃষ্টি রাখিতেন যাহাতে তাহারা সঠিক পথ হইতে ছিটকাইয়া না পড়ে। কিন্তু তাঁহার মৃত্যুর পরে, তাহারা কোন পথ অবলম্বন করিয়াছে এবং কোন কোন মিথ্যা বিশ্বাস গ্রহণ করিয়াছে, তাহা তিনি জানিতে পারেন নাই। এখন যেহেতু তাঁহার অনুসারীরা বিপথগামী হইয়াছে, তাহাতে ইহা চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয় যে, তিনি মৃত্যুবরণ করিয়াছেন। কেননা, এই আয়াত এই কথাই বলে যে, ঈসা (আঃ)-এর অনুসারীরা তাঁহার মৃত্যুর পরেই তাঁহাকে খোদা বলিয়া পূজা করিবে। দ্বিতীয়তঃ এই আয়াতের বর্ণনা অনুযায়ী, ঈসা (আঃ)-এর কথা – তাঁহার মৃত্যুর পরে তাঁহাকে এবং তাহার মাকে দুই খোদা বলিয়া পূজা করার কথা তিনি মোটেই জ্ঞাত নহেন— প্রমাণ করে যে, তিনি আর কখনও এই পৃথিবীতে আগমন করিবেন না। কেননা, যদি তিনি পৃথিবীতে পুনরাগমন করিতেন এবং সচক্ষে দেখিতেন যে, তাঁহার অনুসারীরা তাঁহাকে ও তাঁহার মাতাকে পূজা করিতেছে, তাহা হইলে তিনি এই বিষয়ে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারিতেন না। এইরূপ অজ্ঞতা প্রকাশ করিয়া আল্লাহ্র কাছে উত্তর দিলে, ইহাকে জ্বাজ্জল্যমান মিথ্যা বলিয়া আল্লাহ্ তাঁহাকে তিরস্কার করিতেন। নবী হইয়া, আদৌ তিনি মিথ্যা বলিতে পারেন না। অতএব, এই আয়াত অত্যন্ত দৃঢ়তার সহিত বলিয়া দিতেছে যে, ঈসা (আঃ) মারা গিয়াছেন। তিনি আর কখনও পৃথিবীতে প্রত্যাগমন করিবেন না। তদুপরি, নবী করীম (সাঃ)-এর একটি সুবিখ্যাত হাদীসে আছে যে, নবী করীম (সাঃ) যখন তাহার একদল অনুসারীকে কেয়ামতের দিন দোযখের দিকে নেওয়া হইতেছে দেখিবেন, তখন তিনিও এই কথাগুলিই বলিবেন, যাহা এই আয়াতে, ঈসা (আঃ)-এর মুখে উচ্চারিত হইয়াছে (বুখারীঃ কিতাবুত্ তাফসীর, সূরা মায়েদা)। ইহাও আর একটি অতিরিক্ত প্রমাণ যে, রসূলে পাক (সাঃ)-এর মতই ঈসা (আঃ) মৃত্যুবরণ করিয়াছেন।