‘মুসাদ্দিক্’—সাদ্দাকা হইতে উৎপন্ন, যাহার অর্থ সে ইহাকে বা তাহাকে সত্য বলিয়া মানিল (মুফ্রাদাত, লেইন)। যখন শব্দটি উপরোক্ত অর্থে ব্যবহৃত হয় তখন ইহার পরে কোন অব্যয় ব্যবহৃত হয় না অথবা, ‘বা’ অব্যয়টি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু যখন এই শব্দটি (মুসাদ্দিক্) পূর্ণ করা অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেরূপ এইস্থলে হইয়াছে, তখনই ইহার পরে ‘লাম’ অব্যয়টি ব্যবহৃত হইয়া থাকে (২৪৯২;৩৫ঃ৩২)। কাজেই এখানেও ইহা পালন করা বা পূর্ণ করা অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে, সত্যায়ন করা বা সত্য বলিয়া ঘোষণা করা অর্থে নয়। পূর্ববতী ধর্মগ্রন্থগুলিতে বিশ্বজনীন গ্রন্থ সহকারে একজন শরীয়াত-দাতা নবীর আগমনের যে ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, কুরআন সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ করিয়াছে। যেখানেই কুরআন পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের মুসাদ্দিক বলিয়া নিজেকে বর্ণনা করিয়াছে, সেখানেই এই অর্থেই বর্ণনা করিয়াছে যে, পূর্ববর্তী কিতাব সমূহের ভবিষ্যদ্বাণী কুরআনের আগমনের দ্বারা পূর্ণ হইয়াছে, পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের শিক্ষামালাকে সত্যায়ন ও প্রতিষ্ঠিত করা অর্থে নহে। তবে কুরআন এই কথা স্বীকার করে যে, পূর্বের অবতীর্ণ কিতাব সমূহও ঐশী ছিল বটে, কিন্তু মানবের স্মৃতিবিভ্রম ও হস্তক্ষেপের কারণে এইগুলির পবিত্রতা ও বিশুদ্ধতা বহুলাংশে নষ্ট হইয়া গিয়াছে। তাই,এই কিতাবগুলির শিক্ষাসমূহকে সর্বাংশে গ্রহণ করা যায় না। তাহা ছাড়া এই কিতাব গুলির অধিকাংশ শিক্ষামালাই ছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, সময়ের দীর্ঘ ব্যবধানে এইগুলি অচল হইয়া পড়িয়াছে।