৭৬

হযরত ইব্‌রাহীম (আঃ)-এর পরে, বনী ইসরাঈল-এর সাথে আল্লাহ্‌তা’লার চুক্তি নবায়িত হয়। বাইবেলের বহুস্থানে এই দ্বিতীয় চুক্তির উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায় (যাত্রাপুস্তক- অধ্যায় ২০ দ্বিতীয় বিবরণ- অধ্যায় ৫, ১৮,২৬)। যখন এই চুক্তি বা প্রতিশ্রুতি সম্পাদিত হইতেছিল এবং আল্লাহ্‌র মাহাত্ম্য সিনাই পর্বতে প্রকাশিত হইতেছিল, তখন সাথে সাথে মেঘ-গর্জন, বজ্রপাত, বিদ্যুৎ চমকানী, শিঙ্গা ধ্বনি ও পার্বত্য ধুম্রজাল দেখিয়া (যাত্রাপুস্তক-১৮) বনী ইসরাঈল জাতি হযরত মূসা (আঃ)-কে বলিল, হে মূসা ! তুমিই আমাদের সাথে কথা বল, আমরা শুনিব। কিন্তু আল্লাহ্ যেন আমাদের সাথে কথা না বলেন, কেননা তাহা হইলে ত আমরা মরিয়াই যাইব (যাত্রাপুস্তক-২০ঃ১৯)। এই বেয়াদবীপূর্ণ কথাগুলি বনী ইসরাঈল জাতির ভাগ্যের যবনিকা পাত ঘটাইল। মূসা (আঃ)-কে আল্লাহ্ বলিলেন, তোমার জাতি এতই ঔদ্ধত্য প্রকাশ করিয়াছে যে, ভবিষ্যতে তাহাদের মধ্যে আর কোন শরীয়াতধারী নবীর আগমন হইবে না। তবে, ভবিষ্যতে তাহাদের ভ্রাতৃকুলে অর্থাৎ ইসমাঈলের বংশে, শরীয়াতবাহী নবীর আগমন হইবে। এইরূপে, আল্লাহ্‌তা’লা এই আয়াতে বনী ইসরাঈল জাতিকে স্মরণ করাইয়া দিতেছেন যে, তিনি ইস্‌হাক ও তাঁহার বংশের সহিত যে চুক্তি করিয়াছিলেন, তাহারা ঐ চুক্তি পূর্ণ করিলে এবং তাহার আদেশ-নিষেধ মানিয়া চলিলে, তিনিও তাহাদের প্রতি স্বীয় অনুগ্রহরাজি বর্ষণ করিতে থাকিবেন। কিন্তু তাহারা যদি চুক্তি (প্রতিশ্রুতি) পালন না করে, তাহা হইলে, আল্লাহ্ তাঁহার অনুগ্রহসমূহ হইতে তাহাদিগকে বঞ্চিত করিবেন। অতএব, বনী ইসরাঈল জাতি যেহেতু সেই চুক্তি পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হইল, তখন আল্লাহ্ তাঁহার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইসমাঈলের বংশে সেই প্রতিশ্রুত নবীকে প্রেরণ করিলেন এবং সেই অবধি চুক্তিটি নবাগত নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ)এর অনুসারীদের মধ্যে স্থানান্তরিত করিলেন।