৭১৫

৪ঃ১৩ আয়াতে এক ধরণের ‘কালালাহ’র কথা বলা হইয়াছে, যে পিতা-মাতাহীন ও সন্তান-বিহীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করে এবং কেবল মাতার গর্ভজাত ভাইবোন রাখিয়া যায়, পিতার ঔরসজাত কেহ থাকে না। আলোচ্য আয়াতে অপর ধরণের ‘কালালাহ্’র কথা বলা হইতেছে যে, সন্তানহীন ব্যক্তি কেবল পিতার তরফ হইতে বা পিতা-মাতার তরফ হইতে ভ্রাতা-ভগ্নী রাখিয়া যায়। এই আলোচ্য আয়াতটিকে ৪ঃ১৩ আয়াতের সহিত তুলনা করিলে দেখা যায় যে, স্বাভাবিক কারণেই প্রথমোক্ত শ্রেণীর ভ্রাতা-ভগ্নীগণ শেষোক্ত ভ্রাতা-ভগ্নী হইতে উত্তরাধিকার হিসাবে কম অংশ পাইবেন। উত্তরাধিকার আইনের এই ধারাটিকে পৃথকভাবে বর্ণনা করার উদ্দেশ্য রহিয়াছে। ঈসা (আঃ)-এর বিরুদ্ধে ইহুদীদের বহুবিধ অপবাদ ও অন্যায়াচরনের দীর্ঘ আলোচনার পর, কুরআন সূরাটির শেষপ্রান্তে আসিয়া, আবার ‘কালালাহ্‌’র উত্তরাধিকার বিষয়ে প্রত্যাবর্তন করিয়াছেন। ইহাতে ‘কালালা’র উত্তরাধিকার সম্পর্কিত আইন হওয়া ছাড়াও, ঈসা (আঃ)-এর আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার-বিহীন অবস্থা প্রতিপন্ন করিয়াছে। কেননা তিনিও একধরণের ‘কালালাহ্‌’ ছিলেন। ঈসা (আঃ) পিতার মধ্যবর্তিতায় জন্ম গ্রহণ করেন নাই এবং কোন আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারীও রাখিয়া যান নাই। ইবনে আব্বাস ‘কালালাহ্‌’ এর সংজ্ঞা দিতে যাইয়া বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি সন্তানহীন অবস্থায় মারা যায়, সে-ই ‘কালালাহ্’। ঈসা (আঃ) যেহেতু কোনও আধ্যাত্মিক খলীফা রাখিয়া যান নাই, সেই হেতু তিনি আধ্যাত্মিকভাবেও কালালাহ্।