৬৫৯

ভয়ের সময়ে নামায আদায় করা সম্বন্ধে, কুরআনে তিন স্থানে পৃথকভাবে বলা হইয়াছে। যথাঃ (১) ২ঃ২৪০ আয়াত অনুযায়ী নামায আদায় করা যে সময়ে অতি-বিপদ ও অতি-ভীতির কারণে সম্ভব নয়; (২) বর্তমান আয়াত (৮ঃ১০২), সাধারণ ভীতির অবস্থায় নামায সংক্ষিপ্ত করা যখন প্রয়োজন বিবেচিত হয়, এবং (৩) পরবর্তী আয়াতে (৪ঃ১০৩)। এই আয়াতে ভীতির অবস্থায় জামায়াতে সংক্ষিপ্ত নামায আদায় করা সম্বন্ধে বলা হইয়াছে। নামায সংক্ষেপ করা কিরূপ? বর্তমান আলোচ্য আয়াতে, ব্যক্তিগত নামাযের ক্ষেত্রে, ‘রাকায়াত’ কমানো বুঝায় না। কেননা, ভ্রমণরত অবস্থায় চার রাকায়াতের স্থলে, প্রথম হইতেই নামায দুই রাকায়াত নির্দিষ্ট ছিল। এখানে, শত্রুর আক্রমণের ভয় থাকার কারণেই ব্যক্তিকে তাড়াতাড়ি করিয়া নির্দিষ্ট নামাযটি আদায় করার অনুমতি দেওয়া হইয়াছে। “ভ্রমণরত ব্যক্তির নামায আদায় প্রথম হইতেই দুই রাকায়াতে সীমিত। তবে বিপদের সময় একাকী নামায পড়ার অবস্থায় এই দুই রাকায়াতই দ্রুত গতিতে আদায় করা বিধেয়” (কাসীর)। এই অভিমত সমর্থন করেন মুজাহিদ, দাহ্হাক এবং বুখারী (‘সালাতুল খাওফ’অধ্যায়)। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলিয়াছেন, “প্রথমে ভ্রমণাবস্থার জন্য ইহা দুই রাকায়াতই রহিয়া গেল” (বুখারী, ‘সালাত’ অধ্যায়)। হযরত উমর (রাঃ) বলিয়াছেন, ‘ভ্রমণের অবস্থায় নামায দুই রাকায়াত, দুই ঈদের প্রতিটিতেও নামায দুই রাকায়াত, শুক্রবারের নামাযও দুই রাকায়াত। এই দুই রাকায়াত নামাযই স্বয়ং-সম্পূর্ণ, কমাইয়া দুই রাকায়াত করা হয় নাই। আমরা স্বয়ং নবী করীম (সাঃ) হইতে ইহা জানিয়াছি’ (মসনদ, নিসাঈ এবং মাজাহ্)। খালিদ বিন সাঈদ একবার ইবনে উমরকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘কুরআনে কোথায় পথিকের নামাযের কথা আছে? সেখানে তো কেবল ভীতির অবস্থায় নামায আদায় করা সম্বন্ধে বক্তব্য আছে’। ইবনে উমর উত্তরে বলিলেন, “আমরা নবী করীম (সাঃ)কে যেভাবে যাহা করিতে দেখিয়াছি তাহাই করিয়াছি” অর্থাৎ ভ্রমণরত অবস্থায় নবী করীম (সাঃ)-এর সাথে দুই রাকায়াতই পড়িয়াছি (জরীর, ৫ম, ১৪৪; নিসাঈ, ’সালাত’ অধ্যায়)।