উহুদের পাহাড়-চূড়ায় একদল তীরন্দাজকে রসূলে পাক (সাঃ) মুসলিম বাহিনীর পিছনদিক রক্ষার জন্য নিয়োজিত করিয়াছিলেন। তাহাদের অধিকাংশই শত্রুবাহিনীকে পলায়নপর দেখিয়া ঐ স্থান ত্যাগ করিয়া চলিয়া আসে। যদিও তাহাদের প্রতি নির্দেশ ইহাই ছিল যে, কোনও অবস্থাতেই যেন তাহারা ঐ স্থান ত্যাগ না করে, তথাপি তাহারা শত্রু পরাজিত হইয়াছে দেখিয়া ঐ স্থানে থাকার আর প্রয়োজন নাই মনে করিয়া অধিকাংশই সেখান হইতে সরিয়া পড়ে। সেই সময়ে, তাহারা ঐ স্থানটি ত্যাগ করিলে, নবী করীম (সাঃ)-এর আদেশ লঙ্ঘনের অপরাধ হইবে বলিয়া তাহারা মনে করেন নাই। তাহা ছাড়া, আরবের রীতি অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে যে ব্যক্তি যে পরিত্যাক্ত মালের উপর হাত রাখে, তাহা সে-ই পায়। এমতাবস্থায়, ঐ স্থানে অবস্থানরত থাকিলে, তাহারা গণিমতের (পরিত্যক্ত) মালের কিছুই পাইবে না, এই ধারণাও তাহাদের মনকে প্রভাবিত করিয়াছিল। তাহাদের এই অবাঞ্ছিত ধারণা ও কাজ পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত করে, নবী করীম (সাঃ) তাহাদের গনিমতের মালের অংশ পাওয়ার অধিকারকে উপেক্ষা করিতে পারিতেন। তাহাদের ধারণা ও আশংকাকেই এইখানে নিন্দা করা হইতেছে। তবে, মহানবী (সাঃ)-এর প্রতি তাহাদের আস্থার অভাব ছিল, এরূপ ইঙ্গিত মোটেই নাই। আয়াতটি শুধু এই কথাটিই বলিতে চায় যে, মহানবী (সাঃ) এমন কাজ কখনও করিতে পারেন না যে, তিনি যাহাদিগকে নিজে এক স্থানে কর্তব্যরত করিলেন, তাহার পরিত্যক্ত মালামালের অংশ পাইবে না।