যাহারা বর্তমান যুগের পারিপার্শ্বিকতা দেখিয়া এই সিদ্ধান্তে বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছেন যে, এখনকার যমানায় সুদ ব্যতীত ব্যবস-বাণিজ্য চলিতে পারে না, তাহাদের এইরূপ মনোভঙ্গির জওয়াব হইল এই আয়াত। ইহা বলিতে চায় যে, একমাত্র ইসলামের শিক্ষাকে বাস্তবে অনুসরণ করিয়া মুসলমানেরা সর্বতোভাবে লাভবান হইতে পারে। এই আয়াত মুসলমানকে উদাত্ত আহ্বান জানাইতেছে, ইসলামের আদেশ নিষেধগুলি নিজ নিজ জীবনে অনুসরণ করার জন্য। ইহা এই কথাও বলিয়া দিতেছে যে, বেহেশ্ত ইহজগৎ ও পরজগৎ, আকাশ মালা ও পৃথিবী ব্যাপীয়া বিস্তৃত রহিয়াছে। অর্থাৎ সত্যিকার বিশ্বাসীগণ ইহকালেও বেহেশতে থাকিবে, পরকালে তো বটেই। বেহেশত দোযখের প্রকৃত স্বরূপ কি, তাহা বুঝিবার জন্য রসূলে আকরাম (সাঃ)-এর একটি হাদীস সবিশেষ সাহায্য করে। হুযুর আকরাম (সাঃ)-কে প্রশ্ন করা হইল, আকাশ মণ্ডল ও পৃথিবী জুড়িয়া যদি বেহেশ্ত বিস্তৃত থাকে, তাহা হইলে, দোযখ কোথায় থাকিবে? মহানবী (সাঃ) উত্তরে বলিলেন, দিন আসিলে, রাত্রি কোথায় যায়? (কাসীর)। তিনি আরও বলিয়াছেন, বেহেশ্তের সামান্যতম পুরস্কারও এত বিরাট হইবে যে, আকাশমালা ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী সকল স্থানকে ইহা ছাইয়া ফেলিবে। ইহাতে বুঝা যায় বেহেশ্ত একটা আধ্যাত্মিক অবস্থার নাম, কোন বস্তু-জাগতিক স্থান নহে।