এই কথার তাৎপর্য হইল, শত্রুরা যদি তোমাদিগকে দলবদ্ধ হইয়া প্রস্তুতি নিবার সময় না দেয় এবং এখনই পুনরায় আক্রমণ চালায়, তাহা হইলে আল্লাহ্তা’লা তোমাদের সাহায্যে পাঁচ হাজার ফিরিশ্তা পাঠাইবেন। পূর্ববর্তী আয়াতের ৩,০০০ ফিরিশ্তার স্থলে, এখানে ৫,০০০ ফিরিশ্তার সাহায্য দানের কথা এই জন্য বলা হইয়াছে, যেহেতু মুসলমানদের অবস্থা এই মুহূর্তে অত্যন্ত ক্লান্ত-শ্রান্ত-দুর্বল এবং যোদ্ধাদের স্বল্প-সংখ্যা আরও স্বল্প হইয়া পড়িয়াছে। তাই তাহাদের জন্য আরও অধিক সাহায্য প্রয়োজন। যুদ্ধ বন্ধ করিয়া কুরাইশগণ মক্কার দিকে রওয়ানা হইল, কিন্তু কিছু দূর যাইতে না যাইতেই তাহারা মুসলমানদের উপর পুনরাক্রমণের উদ্দেশ্যে ফিরিবার অভিসন্ধি করিল। রসূলে পাক (সাঃ) ইহা জানিতে পারিয়া যুদ্ধের পরদিনই আবার হুকুম দিলেন, এখনই রণক্ষেত্রের দিকে শত্রুর মোকাবিলার জন্য ফিরিয়া যাইতে হইবে। সাথে সাথে সদা-প্রস্তুত মুসলমানগণ রওয়ানা হইয়া গেলেন। তাহারা হাম্রাল আসাদ নামক স্থান পর্যন্ত অগ্রসর হইলেন, যাহা মদীনা হইতে আট মাইল দূরে। মক্কাবাসীরা মহানবী (সাঃ) ও তাঁহার অনুসারীদের এই দ্রুত-গমন ও তড়িৎ প্রস্তুতিতে স্তম্ভিত ও ভীত-সন্ত্রস্ত হইয়া গেল। তাহারা যুদ্ধের দিকে অগ্রসর না হইয়া তাড়াতাড়ি মক্কার দিকে প্রস্থান করিল। শত্রুদের ভীত-বিহ্বলতা ও প্রস্থান, প্রকৃত পক্ষে ফিরিশ্তাদেরই সৃষ্ট অবস্থার পরিণতি ছিল। নতুবা অন্য কোনও কারণ ছিল না, যাহা মুসলমানদের মোকাবিলা হইতে তাহাদিগকে ফিরাইতে বা বিরত করিতে পারিত। কেননা, মাত্র একদিন আগের যুদ্ধে তাহারা মুসলমানদিগকে ভয়ানক ক্ষতি পৌঁছাইয়াছে, তাহাদের বহু লোককে হত্যা করিয়াছে, বহু লোককে আহত করিয়াছে এবং বাকী মুসলমান যোদ্ধারা এখনো তাহাদের ক্লান্তি-শ্রান্তিও দূর করিতে পারে নাই।