‘আল্-মসীহ্’ ‘মাসাহা’ হইতে উৎপন্ন; ‘মাসাহা’ অর্থ যে নিজের হাতে বস্তুটির ময়লা মুছিয়াছিল। সে ইহাতে তৈল মর্দন করিয়াছিল, সে সারা যমীনে ভ্রমণ করিয়াছিল, আল্লাহ্ তাহাকে আশিসমণ্ডিত করিলেন (আকরাব)। অতএব, ‘মসীহ্’ অর্থ (১) যাহাকে পবিত্র করা হইয়াছে, (২) যিনি অতিমাত্রায় ভ্রমণ করেন, (৩) যিনি আশিসমণ্ডিত। হিব্রু ‘মাশিয়া’ হইতে মেসায়া হইয়াছে এবং এই মেসায়ার আরবী রূপ হইল আল্-মসীহ্। ‘মাশিয়া’ অর্থ পবিত্রকৃত ব্যক্তি (এনসাই বিব ও এনসাই রিল এণ্ড এম্)। ঈসা (আঃ)-কে এই নাম এজন্যই দেওয়া হইয়াছিল যেহেতু তাঁহার জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমণ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু, ইনজীলের বর্ণনানুযায়ী, ঈসা (আঃ)-এর কার্যকাল যদি মাত্র তিন বছরই হইয়া থাকে এবং প্যালেষ্টাইন ও সিরীয়ার কয়েকটি নগর ভ্রমণেই সীমাবদ্ধ থাকে, তাহা হইলে ঐ মসীহ্ নাম তো তাঁহার কার্যের সাথে খাপই খায় না। তবে, সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক গবেষণাদারা এই তথ্য উদঘাটিতও প্রমাণিত হইয়াছে যে, ক্রুশের মর্মান্তিক ঘটনার পর যখন তিনি জখম ও যন্ত্রণার ধাক্কা সামলাইয়া উঠিলেন, তখন তিনি প্রাচ্যের দূরদেশগুলি ভ্রমণ করিতে করিতে এবং বনী ইস্রাঈল জাতির ‘হারানো মেষগুলির’ মধ্যে প্রচারের দায়িত্ব পালন করিতে করিতে, সর্বশেষে কাশ্মীরে বসবাসরত বনী ইস্রাঈলীদের ‘হারানো মেষের’ কাছে আসিয়া পৌছিলেন। দীর্ঘকাল তিনি এইসব এলাকায় ধর্ম প্রচারে লিপ্ত ছিলেন বলিয়া ইতিহাস সাক্ষ্য বহন করিতেছে। [২০০০ টিকা দেখুন]। সেখানে বলা হইয়াছে যে, ঈসা (আঃ) কে উচ্চ পাহাড়ী অঞ্চলে আশ্রয় দেওয়া হইয়াছিল। ‘মসীহ্’ এর একটি অর্থ পূর্বেই বলা হইয়াছে ‘পবিত্রকৃত’। যেহেতু ঈসা (আঃ)-এর জন্মের মধ্যে অস্বাভাবিকতা রহিয়াছে এবং জারজ সন্তান মনে করিয়া তাহাকে ঘৃণা করার সম্ভাবনা ছিল, সেজন্য এইরূপ মিথ্যা অপবাদ ও ঘৃণা হইতে রক্ষার উদ্দেশ্যে তাহাকে ‘পবিত্রকৃত’ নামে অভিহিত করা হইয়াছিল, যেমন অন্যান্য সকল নবিই পবিত্রকৃত ছিলেন।