দান দুই প্রকারের – যাকাত যাহা অবশ্য দেয়, এবং ‘সাদ্কাহ্’ যাহা স্বেচ্ছা-প্রণোদিত। ‘যাকাত’ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অবস্থাশালী মুসলমানদের কাছ হইতে সঞ্চিত ধনের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ হিসাবে সংগৃহীত হয় এবং গরীব-দুঃখী, এতিম, বিধবা, পথিক ইত্যাদির মঙ্গল ও সাহায্যার্থে ব্যয় করা হয়। সাহায্য প্রাপ্তরা যাকাত প্রদানকারীদের কাহাকেও চিনে না বলিয়া ব্যক্তিগতভাবে কাহারও কাছে ঋণী বলিয়া মনে করে না। ‘যাকাত’ কর্তৃপক্ষের (নেযামের) অবশ্য প্রাপ্য এবং ধনীর অবশ্য দেয় বলিয়া ইহা ‘দানের’ পর্যায়ে পড়ে না। ‘সাদ্কাহ্’ হইল স্বেচ্ছা-প্রণোদিত প্রকৃত দান। ইহার দাতা ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য স্বরূপ ব্যক্তি বিশেষকে কিংবা সমাজের কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের জন্য দান করিয়া থাকেন। ইহার দাতাগণ সমাজের গরীব-দুঃখী ভাইদের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও সহানুভূতি প্রকাশ করেন, অপরপক্ষে ইহার গ্রহীতাগণ দাতাদের প্রতি দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিয়া থাকেন। এই দানের মধ্য দিয়া, একদিকে দয়া ও সহানুভূতি এবং অপরদিকে ভক্তি-ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা ইত্যাদি সৎ গুণাবলী সমাজে সঞ্চারিত হয়। তাহা ছাড়া, সত্যিকার বিশ্বাসী ও মৌখিক বিশ্বাসীর মাঝে তারতম্যও বুঝা যায় ‘সাদ্কা’ দ্বারা।