এই আয়াতটি কুমন্ত্রণা-দানকারী কুচক্রীমহলের প্রতি ইঙ্গিত করিয়া বলিতেছে যে, ঐসব কুচক্রীরা মৈত্রী-বন্ধনে জোট-বদ্ধ হইয়া প্রতিষ্ঠিত সুশৃঙ্খল প্রশাসনকে ভাঙ্গিয়া ফেলার জন্য কর্তৃত্বকারীদের বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়া জনগণকে উস্কানী ও প্ররোচনা দিতে থাকে; অজুহাত সৃষ্টি করিয়া আইন-অমান্য আন্দোলন পরিচালিত করে এবং বিশ্বাস-ভঙ্গের ইন্ধন যোগাইয়া মুসলমানের ঐক্যে ফাটল ধরায় এবং ঝগড়া-ফাসাদ সৃষ্টি করে। এই সূরাটি মানুষের জাগতিক জীবনের পার্থিব ব্যাপার ও বিষয়াদির অবস্থা ব্যক্ত করিয়াছে। আর পরবর্তী সূরাটি ব্যক্ত করিয়াছে মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের বিষয়াদির অবস্থার কথা। মানুষ জীবনে বহু প্রকারের প্রতিবন্ধকতা ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়। যখনই সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হয়, বিশেষ করিয়া যখনই সে সত্যের আলো-বিস্তারের মহান ব্রতে আত্ম-নিয়োগ করে, তখনই অন্ধকারের অশুভ শক্তি তাহাকে চারিদিক হইতে ঘিরিয়া ধরে। তাহা সত্বেও যখন সে কৃতকার্যতার কাছাকাছি পৌঁছে, তখন কুচক্রী-বাহিনী তাহার পথে বিভিন্ন ধরণের বিঘ্ন ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তাহার পরেও যখন সে কৃতকার্যতার দ্বার খুলিয়া ফেলে, তখন হিংসুটে মানুষের দল, তাহার পরিশ্রমের ফল ভোগ করা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করিতে চায়। এইসব বাধা-বিঘ্ন, বিপদাপদ ও সংকটাবস্থা হইতে রক্ষা পাইবার উদ্দেশ্যে মো’মেনকে এইভাবে দোয়া করিবার ও সাহায্য চাওয়ার শিক্ষা দেওয়া হইয়াছে যাহাতে চতুর্দিকের অন্ধকারের মধ্যেও সে আলো প্রাপ্ত হয়, পথ দেখিতে পারে এবং দৃষ্কৃতকারীদের ষড়যন্ত্র ও হিংসুটে মানুষের হিংসার থাবা হইতে রক্ষা পাইতে পারে।