৩৪১০

যাহারা অশুভ চক্র ও শয়তানী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম করার ব্রত অবলম্বন করে, আল্লাহ্ তাহাদিগকে কতইনা ভালবাসেন! এমনকি আল্লাহ্ ঐ যোদ্ধাগণের সাজ-সরঞ্জামকে পর্যন্ত ভালবাসিয়া থাকেন। ইহার প্রমাণ এই যে, আল্লাহ্‌তা’লা সেই সব মহান যোদ্ধাদের নামে, এমনকি তাহাদের বাহন অশ্বগুলির নামে পর্যন্ত শপথ গ্রহণ করিতেছেন। আদিয়াত অর্থ যোদ্ধারদল ও তাহাদের অশ্বগুলি। আয়াতটি সাহাবীগণের পর্যাপ্ত প্রশংসাপূর্ণ বর্ণনা প্রদান করিতেছে যাহারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় প্রাণপণ যুদ্ধ করিয়া সহাস্য বদনে শাহাদত বরণ করিতে বিন্দুমাত্র কুষ্ঠিত হন না। আয়াতটি বলিতেছে যে, তাঁহারা অসীম সাহস, উৎসাহ ও প্রেরণা নিয়া যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে বীরবিক্রমে অগ্রসর হন। তাঁহারা এই প্রতিজ্ঞায় অটল থাকেন যে, হয় জয়ী হইবেন নতুবা আল্লাহ্‌র পথে শাহাদত বরণ করিবেন। আয়াতটি তাহাদের অশ্বের ক্ষিপ্রগতি ও তাহাদের আক্রমণের অপ্রতিরোধ্য তীব্রতার প্রশংসা করিতেছে। এই সব ঐশী-বাণী ঐ সময়ে মক্কায় অবতীর্ণ হইয়াছিল, যখন মুসলমানদের কাছে কোন ঘোড়া ছিল না। বদরের যুদ্ধে মুসলিম সৈন্যের কাছে মাত্র দুইটি ঘোড়া ছিল, একটি ছিল হযরত মিকদাদের আর অপরটি ছিল হযরত যুবায়রের। আয়াতটি মূলতঃ একটি ভবিষ্যদ্বাণী যে, মুসলমানেরা শীঘ্রই অশ্বাধিকারী সেনা শক্তিতে পরিণত হইতে যাইতেছে। ‘আদিয়াত’, ‘মূরিয়াত’ ও ‘মুগীরাত’ শব্দত্রয়কে বিভিন্ন বুযুর্গ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করিয়াছেন। হযরত ইবনে আব্বাসের মতে এই শব্দগুলি হজ্জের সময়ে যে উটের সারি মক্কাভিমুখী হইয়া দৌড়াইতে থাকে, উহাকে বুঝাইয়াছে। ‘রূহুল মায়ানী’ নামক গ্রন্থের রচয়িতার মতে এই শব্দগুলি মুসলিম অশ্বারোহী যোদ্ধাগণ ও তাহাদের অশ্বগুলিকে বুঝাইয়াছে। সুফী শ্রেণীর অনেকে বলিয়াছেন, এইগুলি হইল আধ্যাত্মিক পথের যাত্রীগণের দ্রুতগতিতে তাহাদের স্রষ্টা ও প্রভুর সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ধাবিত হওয়ার বিবরণ বিশেষ।