৩৩২২

এই আয়াতে অন্য একটি জরুরী প্রশ্নের উত্তর রহিয়াছে। প্রশ্নটি হইলঃ আল্লাহ্ কেন বারে বারে, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ও ভিন্ন ভিন্ন জাতির মধ্যে কেবল ঐ যুগের ও ঐ জাতির উপযুক্ত করিয়া অস্থায়ী শরীয়াত প্রেরণ করিলেন—এইরূপ করার হেতু কি? ইহার উত্তর হইতেছে, আল্লাহ্ দুই প্রকারের বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেনঃ (ক) শাক-সবজি ও তৃণজাতীয় বস্তু যাহা মানুষের অস্থায়ী প্রয়োজনসমূহ মিটাইয়া থাকে। ইহারা স্বল্পস্থায়ী জীবনের অধিকারী হয়। পূর্ববতী ধর্মশাস্ত্র ও ধর্ম-বিধানগুলি সমসাময়িক মানুষের প্রয়োজন মিটাইবার জন্য অবতীর্ণ হইয়াছিল। এইগুলি ছিল তাই অস্থায়ী আয়ুষ্কাল শেষে তৃণের মত শুকাইয়া গিয়াছে, (খ) ঐ সকল বস্তু যাহা চিরস্থায়ীভাবে মানুষের কাজ লাগিয়া থাকে, যেমন সূর্য, চন্দ্র, পৃথিবী ইত্যাদি। যতদিন বিশ্ব-জগত থাকিবে, ততদিন এইগুলিও থাকিবে। কুরআনও এই বিশ্ব-জগতেরই মত। বিশ্বের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের অভ্রান্ত পথ-প্রদর্শক রূপে ইহা স্থায়ীভাবে বিরাজ করিবে। তাই, ইহা হস্তক্ষেপমুক্ত ও অপরিবর্তিত রহিয়াছে এবং এইরূপই থাকিবে। সময়ের ক্ষয়কারী প্রভাব ইহার স্থায়িত্বের ও অকৃত্রিমতার উপর কোনই ক্রিয়া করিতে পারিবে না।