৩৩১৮-ক

কুরআনের একটা সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য এই যে, ইহা কঠোর ও শ্রুতিকটু শব্দ ব্যবহারের পরিবর্তে পরিমার্জিত ও রুচিসম্মত ভাষায় ভাব প্রকাশ করে।এখানে, ‘নিগর্মনশীল পানি যাহা মেরুদণ্ড ও পঞ্জরাস্থির মধ্য হইতে নির্গত হয়’ এমনি ধরণের একটি মার্জিত প্রকাশ-ভঙ্গি। উপযুক্ত স্থান বিশেষে, কুরআন এইরূপ প্রকাশ-ভঙ্গি দ্বারা কঠিন বিষয়কেও কোমল করিয়া তোলে। আয়াতটির তাৎপর্য এই হইতে পারে যে, মানুষের জন্ম হয় পিতার কটিদেশ হইতে নির্গত জলময় শুক্রকীট দ্বারা, এবং শিশু মায়ের স্তন হইতে পুষ্টি আহরণ করে। মানুষকে এমন একটি তরল পদার্থ হইতে সৃষ্টি করা হইয়াছে যাহা দ্রুততার সহিত সঞ্চারিত হইয়া পতিত হয়—এই কথা বলার তাৎপর্য ইহাই যে, মানুষকে এমন প্রাকৃতিক গুণাবলী ও উপাদানসহ সৃষ্টি করা হইয়াছে যে, সে দ্রুত উন্নতি করিতে পারে। কিন্তু একইভাবে সে নিম্ন হইতে নিম্নতর স্তরে পতিতও হইতে পারে, যদি সে আল্লাহ্‌-প্রদত্ত শক্তিনিচয়ের সঠিক ও উপযুক্ত ব্যবহার না করে। মোটামুটি, আয়াতটির অর্থ এই যে, মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতি ও অবনতি, উত্থান ও পতন, একটির পর অপরটি ঘটিতেই থাকে, যেমন বীর্য তীব্র গতিতে ধাবমান হইয়া নিপতিত হয়।