কুরআন ক্রমে ক্রমে এবং খণ্ড-খণ্ডভাবে অবতীর্ণ হইয়াছে। ইহা পূরাপূরি অবতীর্ণ হইতে ২৩ বৎসর সময় লাগিয়াছে। এই ক্রম-অবতরণ পদ্ধতির মধ্যে দুইটি উদ্দেশ্য রহিয়াছেঃ (ক) ইহা মো’মেনগণকে সুযোগ দিয়াছে, যাহাতে তাহারা অবতীর্ণ অংশটুকু শিখিতে, মুখস্থ করিতে, সংগৃহীত করিতে এবং জীবনে প্রতিফলিত করিতে পারে এবং (২) পরিবর্তিত ও পরিবর্তনশীল সমাজ-বিবর্তনের ধারার বিভিন্ন প্রয়োজনকে মিটাইবার জন্য ও সময়ের চাহিদা পূরণের জন্য ক্রম-ধারায় অবতরণই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত ছিল। এই পদ্ধতি অবলম্বনের মধ্যে মো’মেনদের ঈমানবর্ধন, মুসলমানদের প্রত্যয়-বৃদ্ধি ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত। কেননা, ফাঁকে ফাঁকে মধ্যবর্তী সময়ে, তাহারা কুরআনের মধ্যে বর্ণিত ও ঘোষিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলি বাস্তবে পরিণত হওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখার মহা-সুযোগ লাভ করিয়া পরিতৃপ্ত হইতেন এবং দ্বিগুণ উৎসাহ লাভ করিতেন। কুরআনের খণ্ড-খণ্ডভাবে, ক্রমান্বয়ে অবতরণ দ্বারা বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্বাণীটি পূর্ণ হইয়াছেঃ ‘বিধির উপরে বিধি, বিধির উপরে বিধি, পাঁতির উপরে পাঁতি, পাঁতির উপরে পাঁতি, এখানে একটুকু; সেখানে একটুকু।’ শুন, তিনি অস্পষ্টবাক ওষ্ঠ ও পরভাষা দ্বারা এই লোকদের সহিত কথাবার্তা কহিবেন, যাহাদিগকে তিনি বলিলেন’ (যিশাইয়- ২৮ঃ১০)।