‘যানজাবীল’ একটি যুগ্ম শব্দ। ‘যানা’ (উর্ধ্বে উঠা) এবং ‘জাবাল’ (পাহাড়) মিলিয়া অর্থ দাঁড়ায়, সে পর্বতারোহণ করিল। ‘যানজাবীল’ (আদা) শরীরে স্বাভাবিক উত্তাপ বর্ধনে খুবই সাহায্য করে। ইহা দুর্বল শরীরে শক্তি যোগায় এবং তেজ সৃষ্টি করে, যার ফলে মানুষ সুউচ্চ পাহাড় পর্যন্ত ডিঙাইতে পারে। যে দুইটি আয়াতে ‘কাফূর’ (কর্পূর) ও ‘যানজাবীলের’ (আদা) উল্লেখ রহিয়াছে, তাহাতে বুঝানো হইয়াছে যে, নীচস্তরের ইন্দ্রিয়াসক্তি হইতে মুক্ত হইয়া পুণ্য ও ধার্মিকতার উচ্চস্তরে উঠিতে হইলে, মানুষকে দুইটি স্তর অতিক্রম করিতে হয়। প্রথম স্তরে বিষাক্ত বস্তুগুলির বিনাশ সাধন ও রিপুসমূহের দমন করিতে হয়। ইহাকে বলা হইয়াছে ‘কাফূর’ স্তর বা কর্পূরাবস্থা। কেননা এই স্তরে বস্তু নিচয় ও প্রবৃত্তির দমন পর্যন্ত ঘটিয়া থাকে, যেমন কর্পূর রিপুসমূহের কুফল দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করিয়া থাকে। কিন্তু যে আধ্যাত্মিক শক্তি সর্বপ্রকার বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করিবার সামর্থ্য যোগায় তাহা অর্জিত হয় দ্বিতীয় স্তরে, যাহাকে বলা হইয়াছে ‘যানজাবীল’ স্তর বা যানজীবিলী অবস্থা। আধ্যাত্মিক আদা আধ্যাত্মিক রীতি-নীতি ও বিষয়াবলীর উপরে টনিকের মত ক্রিয়া করে এবং ঐশী সৌন্দর্য ও মহিমা বিকাশে সাহায্য করিয়া আত্মাকে চাংগা করিয়া তোলে। ইহার ফলেও আধ্যাত্মিক পথের যাত্রী অনতিক্রম্য ভূমি অতিক্রম করিতে সমর্থ হয়। পথে পথে যত উচ্চ পাহাড়-টিলা ইত্যাদি দেখা দেয়, শক্তি-প্রাপ্ত আত্মার বলে বলীয়ান হইয়া সে ঐগুলিও পার হইয়া যায়।