মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির তিনটি বড় বড় স্তর রহিয়াছে বলিয়া কুরআন উল্লেখ করিয়াছে। প্রথম স্তরটিকে বলা হইয়াছে ‘নফসে আম্মারা’ বা মন্দকাজের আদেশ প্রদানে তৎপর আত্মার স্তর। এই স্তরে মানুষের পাশবিক বা জৈবিক শক্তির প্রাধান্য থাকে। দ্বিতীয় স্তরটি হইল ‘নফসে লাউওয়ামা’র স্তর বা ভর্ৎসনাকারী আত্মার স্তর। এই স্তরে মানুষের জাগ্রত বিবেক মন্দ কাজের জন্য তাহাকে ভর্ৎসনা করে এবং তাহার পাশবিক ইন্দ্রিয়-সমূহসহ মানসিক ক্ষুধাগুলিকে পরাভূত করে। ইহাই তাহার নৈতিক পুনরুত্থানের ধাপ। আর সেজন্যই এই পুনরুদ্ধার বা পুনরুত্থানকে কিয়ামত বা সর্বশেষ পুনরুত্থানের সাক্ষীরূপে এখানে পেশ করা হইয়াছে। যদি কোন দায়িত্বই না থাকে এবং পরবর্তী জীবনে যদি তাহার কার্যাবলীর হিসাব দিতে না হয়, তাহা হইলে মন্দ কাজ করিয়া সে বিবেকের তাড়না খায় কেন? আধ্যাত্মিক তৃতীয় বা সর্বোচ্চ স্তর হইল ‘নফসে মুৎমায়িন্নাহ্’ (শান্তি-প্রাপ্ত আত্মা)। এই স্তরে পৌঁছিয়া আত্মা সম্পূর্ণ প্রশান্তি লাভ করে। ভুলভ্রান্তি ও পাপাসক্তি হইতে সম্পূর্ণ মুক্ত হইয়া সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার সহিত তাহার ইচ্ছা একাকার হইয়া যায়।