কুরআনে ইহা বারংবার ব্যাখ্যা করা হইয়াছে যে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন কোন নূতন জীবন নহে, বরং ইহজীবনের ঘটনাবলীর প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিকৃতি মাত্র। এই আয়াতগুলিতে, ইহজগতের আধ্যাত্মিক অত্যাচারসমূহকে দৈহিক শাস্তিরূপে দেখানো হইয়াছে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ, ঘাড়ের চতুর্দিকে দীর্ঘ শিকলের বন্ধন, ইহকালের অত্যধিক কামনা-বাসনা ও ভোগ-বিলাসের প্রতিচ্ছবি। এই কামনা-বাসনাই পরলোকে শিকলের বাঁধন সাজিবে। সেইরূপে, ইহলোকের বন্ধনসমূহ পরলোকে পায়ের শৃঙ্খল রূপে দেখা দিবে। ইহলোকের অন্তর্দাহ পরলোকে প্রজ্জলিত অগ্নিশিখার রূপ ধারণ করিবে। মানুষের আয়ু (শৈশব ও বার্ধক্যের অচলাবস্থা বাদ দিলে) গড়ে সত্তর বৎসর ধরা যাইতে পারে। দুষ্ট অবিশ্বাসী এই সত্তরটি বৎসর কেবল দুনিয়াদারীর মধ্যে থাকিয়া, কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার ভিতর দিয়া কাটাইয়া দেয়। সে নিজেকে ইন্দ্রিয়াসক্তির শিকল হইতে মুক্ত করিবার চেষ্টা করে না এবং এই কারণেই পরকালে সত্তর বৎসর ব্যাপী কামনা-বাসনার প্রতীকরূপে সত্তর হাত লম্বা শিকল তাহাকে শৃঙ্খলিত করিবে। এক এক হাত শিকল তাহার কামনা-বাসনা ও ইন্দ্রিয়াসক্তির জীবনের এক একটি বৎসর।