৩০৭৩

এই আয়াতটি কোন বিশেষ ঘটনার কথা বলিতেছে তাহা সঠিক নির্ণয় করা কঠিন। তবে বর্ণনার ধারাবাহিকতার দ্বারা বুঝা যায় যে, ইহা আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত নিম্ন ঘটনাটির কথাই বলিতেছে। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ যখন ৩৩ঃ২৯ আয়াত অবতীর্ণ হইল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর স্ত্রীগণকে দুইটি পথের নির্বাচন করিবার অনুমতি দেওয়া হইল। একটি পথ হইল মহানবী (সাঃ)-এর সহিত দুঃখ-কষ্ট করিয়া চিরসঙ্গিনীরূপে থাকিয়া যাওয়া এবং অপরটি হইল তাঁহাকে ছাড়িয়া গিয়া সুখ-সম্ভোগ ও বিলাসিতার জীবন অতিবাহিত করা। কেননা, তাঁহারা সকলে মিলিয়া মহানবী (সাঃ)-এর কাছে সুখ-সাচ্ছন্দ্যের জীবিকার দাবী করিয়াছিলেন। প্রত্যুত্তরে, মহানবী (সাঃ) উপরোক্ত দুইটি পথের একটি অবলম্বন করার জন্য স্ত্রীগণকে প্রস্তাব দিলেন। কিন্তু এই প্রস্তাবটি তিনি সর্ব প্রথম হযরত আয়েশা (রাঃ)-র কাছে গোপনে প্রকাশ করেন (বুখারী কিতাবুল মাযলিম ওয়াল গাস্‌ব)। সর্বপ্রথমে হযরত আয়েশার কাছে কথাটি উত্থাপনের কারণ হইল, স্ত্রীগণের স্বাচ্ছন্দ্য জীবিকার দাবী উত্থাপনের বেলায় হযরত আয়েশা (রাঃ)-ই নেতৃত্ব দিয়াছিলেন। এই নেতৃত্বের দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন হাফসা (রাঃ)। ইহা অসম্ভব নহে যে, হযরত আয়েশা রসূলে মকবুল (সাঃ)-এর কাছ হইতে প্রস্তাবটি পাইয়া, ইহা হযরত হাফসাকে জ্ঞাত করেন। এইভাবে রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর প্রস্তাবটি যাহা কেবল হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে ব্যক্ত হইয়াছিল এবং অন্য কোন স্ত্রীর কাছে তখনও উত্থাপিত হয় নাই, তাহা গোপনীয়তা ভেদ করিয়া প্রকাশিত হইয়া পড়িল। যাহা হউক, বাস্তবে কি ঘটিয়াছিল সম্পূর্ণ উদঘাটন করা সম্ভব না হইলেও, আয়াতটি এই কথার উপরে সবিশেষ জোর দিতেছে যে, কোন ব্যক্তির কাছে কোন কথা বা বিষয়ের গোপনীয়তা রক্ষার ভার দিলে, সে যেন তাহা প্রকাশ না করে। বিশেষভাবে গোপন বিষয়টি যদি স্বামী-স্ত্রীর হয় কিংবা ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ব্যাপার হয়, আর একই ধারায় ব্যাপারটা যদি আল্লাহ্‌র নবী ও তাঁহার কোন অনুসারীর মধ্যেকার বিষয় হইয়া থাকে তাহা হইলে ইহার গোপনীয়তা আমানত।