৩০৪৫

মহানবী (সাঃ)-এর উপর আল্লাহ্‌ কর্তৃক অর্পিত ঐশী গুরু-দায়িত্বের মধ্যে এই আয়াতটিতে চারটি পবিত্র কর্তব্যের উল্লেখ করা হইল। ইহাই সেই মহান দায়িত্ব ও সেই সুমহান কর্তব্য যাহা সম্পাদন করার জন্য হযরত ইব্‌রাহীম (আঃ) আল্লাহ্‌র কাছে কয়েক হাজার বৎসর পূর্বেই এক অসামান্য গুণসম্পন্ন মহানবীকে আরবদের মধ্যে প্রেরণের প্রার্থনা করিয়াছিলেন। হযরত ইব্‌রাহীম (আঃ) তাঁহার পুত্র ইসমাঈল (আঃ) সহযোগে সেই সুদূর অতীতে যখন কা’বা শরীফের ভিত্তি উঁচু করিয়া গড়িতেছিলেন, তখনই তিনি এই সুদূর-প্রসারী দোয়াও আল্লাহ্‌র সমীপে পেশ করিয়াছিলেন (২ঃ১৩০)। প্রকৃত কথা ইহাই যে, কোন সংস্কারকই নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পাদন করিতে পারেন না, যদি না তিনি স্বকীয় পূত-পুণ্য দৃষ্টান্ত ও পবিত্র উদাহরণ দ্বারা এমন এক সরল, ভক্ত ধার্মিক ও প্রাণোৎসর্গকারী সম্প্রদায় বা জামায়াত সৃষ্টি করিয়া লন, যাহারা তাঁহার আদর্শ ও নীতির ছাঁচে গড়িয়া উঠে এবং তাঁহার বাণীর মর্মকথা, দর্শন, তাৎপর্য, যুক্তি, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে পূর্ণভাবে উপলব্ধি করিয়া সকলের কাছে তাহা প্রচার করার মত আগ্রহ, যোগ্যতা, ও নিষ্ঠা অর্জন করিয়া লয়। সংস্কারক তাঁহার অনুগামী সম্প্রদায়কে এমনিভাবে শিক্ষা দান করিয়া থাকেন যে, অনুসারীদের বুদ্ধি সূতীক্ষ ও পবিত্র হইয়া উঠে, তাহাদের ধর্ম-বিশ্বাস সঠিক, সুদৃঢ় ও সুনিশ্চিত হয়। তাঁহার পবিত্রতম দৃষ্টান্ত ভক্তদের হৃদয়ের সকল পঙ্কিলতাকে দূরীভূত করিয়া পবিত্রতাকে শতগুণে রদ্ধি করিয়া দেয়। ধর্মের এই মৌলিক উপাদানগুলির কথাই এই আয়াতটিতে বিরত হইয়াছে।