এই নিষেধাজ্ঞাটি অত্যন্ত কঠোর ধরণের। মুসলমানদের নিষেধ করা হইতেছে যে, ঐ সকল লোক যাহারা আল্লাহ্র প্রকাশ্য শত্রু যাহারা নবী করীম (সাঃ) ও তাঁহার সাহাবীগণকে (রাঃ) তাঁহাদের বাড়ীঘর হইতে বহিষ্কার করিয়াছে এবং ইসলামকে ধ্বংস করিবার চেষ্টায় লিপ্ত রহিয়াছে, তাহাদের সাথে মুসলমানগণ যেন বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন না করে। এই নিষেধাজ্ঞা এতই ব্যাপক-ভিত্তিক যে, রক্ত-সম্পর্কের বন্ধনও এই নিষেধাজ্ঞার আওতাকে ক্ষুন্ন করিতে পারিবে না। ইসলামের শত্রু আল্লাহ্র শত্রু, সে যে কেহই হউক না কেন। এই আয়াত নাযেল হওয়ার সাথে একটি নিকট-ঘটনার সম্পর্ক আছে। কুরায়শগণ হুদায়বিয়ার সন্ধি ভঙ্গ করিলে, নবী করীম (সাঃ) তাহাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মনস্থির করিলেন। তখন হাতিব বিন আবি বালতাহ নামক এক ব্যক্তি মক্কাবাসীদিগকে একটি পত্র লিখিয়া, মহানবী (সাঃ)-এর আসন্ন মক্কা-অভিযানের কথা জানাইয়া দিবার চেষ্টা করে। রসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে এই কথা জানিতে পারেন এবং হযরত আলী, যুবাইর ও মিকদাদকে ঐ পত্রবাহকের অনুসন্ধানে পাঠান। পত্রবাহক একজন স্ত্রীলোক ছিল, তাহারা তাহার নাগাল পাইলেন এবং পত্রখানি লইয়া মদীনায় ফিরিয়া আসিলেন। হাতিবের দোষ ছিল অতীব গুরুতর, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের গোপন-তথ্য ফাঁস করার অপরাধ। তাহাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার কথা। কিন্তু তাহাকে ক্ষমা করিয়া দেওয়া হইল এই কারণে যে, ঐ ব্যক্তি তাহার এই ধরণের কাজের গুরুতর পরিণতি কি হইতে পারে তাহা না বুঝিয়াই অসাবধানভাবে কাজটা করিয়া ফেলিয়াছিল। এই কাজের পশ্চাতে কোন দুষ্ট-বুদ্ধি বা কু-উদ্দেশ্য ক্রিয়াশীল ছিল না। প্রসঙ্গতঃ এই সূরার অবতরণ ও উপরোক্ত ঘটনা সম-সাময়িক। অতএব, এই সূরার অবতরণের তারিখ নির্ণয়ে কোন অসুবিধা নাই।