২৯৩৯

দুইটি বাগান (বেহেশ্‌ত) বলিতে বুঝাইতে পারেঃ- (১) সৎভাবে জীবন যাপনের ফলে মনে যে অনাবিল শান্তি বিরাজ করে তাহা এবং দৈহিক ভোগ-বিলাসে মত্ত জীবনে যে জ্বালাময়ী ও যন্ত্রণার উদ্রেক হয়, তাহা হইতে মুক্তি। আল্লাহ্‌তা’লার খাতিরে ইহজগতের লোভ-লালসা ও অবৈধ কামনা-বাসনা হইতে দূরে থাকাই হইল একটি বাগান। (২) অপর বাগানটি হইল পরজগতে আল্লাহ্‌তা’লার সন্তুষ্টির মধ্যে অবস্থান লাভ। একজন সত্যিকার বিশ্বাসী ইহাজগতেও আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের ছায়াতলে এমনি আশীষমণ্ডিত জীবন যাপন করে যে, কোন দুঃখ-কষ্টই তাহাকে বিচলিত করে না। ইহাই এই পৃথিবীতে বেহেশ্‌ত যাহা আল্লাহ্-ভীরু সজ্জনকে ইহলোকে প্রদান করা হইয়া থাকে, যাহার মধ্যে সে সদা-সর্বদা দিন কাটায়। পরলোকের প্রতিশ্রুত বেহেশ্‌ত, ইহকালের বেহেশতেরই প্রতিচ্ছবি। ইহলোকে ভোগ-করা আধ্যাত্মিক স্বাদ ও কল্যাণই পরলোকে অধিকতর স্পষ্টভাবে বাস্তবে রূপায়িত হইবে। সত্যিকার মো’মেন বান্দার এই বেহেশ্‌তী অবস্থাকে কুরআনের ১০ঃ৬৫ ও ৪১ঃ৩২ আয়তদ্বয়ে বর্ণনা করা হইয়াছে। তাহা ছাড়া, দুইটি বাগান বলিতে দুই জোড়া নদী-বিধৌত দুইটি উর্বর উপত্যকাকেও বুঝাইতে পারে, যাহার একটি হইতেছে সেই উপত্যকা যাহা জাইহান ও সাইহান নদীর মধ্যে অবস্থিত থাকিয়া উভয় নদী হইতে পানি-সিঞ্চন পায় এবং অপরটি হইতেছে ফুরাত ও নীল নদের মধ্যেবর্তী এলাকা যাহা এই নদীদ্বয় হইতে পানি লাভ করে। হাদীসে এই নদীগুলিকে জান্নাতের নদী বলা হইয়াছে (মুসলিম)। খলীফা হযরত উমর (রাঃ)-এর আমলে এই দুইটি এলাকাই মুসলমানদের অধিকারে আসে।