এই আয়াতটিকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা হইয়াছে। একটি ব্যাখ্যা এই যে, বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিকগণ যাহারা বস্তু-বিজ্ঞানের উন্নতিতে চরমত্ব লাভ করিয়াছেন বলিয়া গর্ব বোধ করেন, তাহাদিগকে এই আয়াতে বলা হইতেছে যে, জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাহারা যত উন্নতিই করুক না কেন, যেসব প্রাকৃতিক আইন-কানুন বিশ্ব-জগতের চালিকা শক্তিরূপে কাজ করিয়া বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণে রাখিয়াছে, সেই সব আইন-কানুন তাহারা কখনও সম্পূর্ণ মাত্রায় আয়ত্ত করিতে পারিবে না। যত চেষ্টাই তাহারা করুক না কেন সর্বাধিপতি আল্লাহ্র কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে তাহারা সফলকাম হইবে না। ইহার অর্থ ইহাও হইতে পারে যে, ‘তোমরা আকাশ ভেদ করিয়া যেখানেই যাও না কেন তোমরা দেখিতে পাইবে যে, সেখানেও আল্লাহ্র বাদশাহাত বিরাজ করিতেছে’। অন্য একটি ব্যাখ্যা হইলঃ এই আয়াত পাপীদিগকে সাবধান করিয়া বলিতেছে যে, তোমরা দুঃসাহসিকতার সহিত পৃথিবী ও আকাশের সীমা ভেদ করিয়া যাইতে চাহ, কিন্তু ঐশী-বিধানকে অবজ্ঞাভরে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করিলে কখনও বিনা শাস্তিতে পরিত্রাণ পাইবে না। এই আয়াতে বর্তমান যামানার রকেট, স্পূটনিক ইত্যাদি মহাকাশ পাড়ি দিবার খেয়াযানগুলির প্রতিও ইঙ্গিত থাকিতে পারে, যাহা দ্বারা আমেরিকা ও রাশিয়া গ্রহ হইতে গ্রহান্তরে যাইবার চিন্তা-ভাবনা করিতেছে। তাহাদিগকে বলা হইতেছে যে, বড়জোর তাহারা কতকগুলি গ্রহ-উপগ্রহে যাইতে পারে, কিন্তু আল্লাহ্র বিশ্ব-মহাবিশ্ব তো অসীম ও ধারণাতীত।